[আত্মহত্যা করা হিন্দু স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, অভিযুক্ত হাফিজুর পলাতক
সনাতন নিউজ২৪.<> ঢাকা বাংলাদেশ
মঙ্গলবার „০৯ মার্চ ২০২১„
এলাকাবাসীর ধারণা, হাফিজুর রহমান প্রেমের ফাঁদে ফেলে সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেল করতে ভিডিওটি ধারণ করেন। এ নিয়ে ক্ষোভ-লজ্জায় মেয়েটি আত্মহননের পথ বেছে নিতে পারে। ৪ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে হাফিজুরকে দেখা যায়। তিনি ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুছ আলীর ছেলে। অভিযোগ উঠেছে, ওই ভিডিও ধারণ করেছেন বিপুল চন্দ্র (২৬) নামের একজন। বিপুলের সঙ্গে হাফিজুরের বন্ধুত্ব আছে।
এলাকার লোকজন বলেন, ওই কিশোরীর বাবা মারা গেছেন আট বছর আগে। তিনি দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। তিন বোনের মধ্যে ওই কিশোরী ছোট। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। গত ৫ জানুয়ারি সকালে নিজ বাড়িতে কিশোরীটি বিষ পান করে। মেয়েটিকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যায় সে মারা যায়।
ভিডিওটি এলাকায় ভাইরাল হয়েছে ১৫ দিন আগে। এর পর থেকে কিশোরীর বিধবা মা বাড়িতে নেই। তিনি কোথায় গেছেন, প্রতিবেশীরা কেউ তা জানেন না। বাড়িতে তালা ঝুলছে।
বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) নাজমুল হুসাইন বলেন, ‘বিষ পান করলে কিশোরীটিকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে শুনেছি মেয়েটি সেখানে মারা গেছে।’
সরেজমিনে জানা যায়, ভিডিওটি এলাকায় ভাইরাল হয়েছে ১৫ দিন আগে। এর পর থেকে কিশোরীর বিধবা মা বাড়িতে নেই। তিনি কোথায় গেছেন, প্রতিবেশীরা কেউ তা জানেন না। বাড়িতে তালা ঝুলছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার দুই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, হাফিজুর রহমান মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেল করায় মেয়েটি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। মেয়েটিকে আত্মহত্যার পথে যে বা যারা ঠেলে দিয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিচার হওয়া উচিত বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।
হাফিজুর রহমানের এলাকার লোকজন বলেন, হাফিজুর দুটি বিয়ে করে দুই স্ত্রীকেই তালাক দিয়েছেন। তাঁকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর বাবা ইউনুছ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ইউপি নির্বাচন করব। প্রতিপক্ষরা আমাকে ও আমার পরিবারকে ঘায়েল করতে আমার ছেলের নামে এমন অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন।’ হাফিজুরের খোঁজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচ দিন ধরে সে বাড়িতে নেই।’
মুঠোফোন থেকে জোর করে মেমোরি কার্ড খুলে নিয়ে ভিডিও ভাইরাল করার ঘটনায় বিপুল চন্দ্র গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়েছেন।
এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটি আত্মহনন করার পর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বিপুল চন্দ্রের মুঠোফোনে হাফিজুর রহমান ও আত্মহত্যা করা কিশোরীর ভিডিও আছে। তিন যুবক ১৫-১৬ দিন আগে স্থানীয় বাজারে বিপুলকে আটক করে তাঁর মুঠোফোন থেকে মেমোরি কার্ড খুলে নেওয়ার পর এলাকায় ওই ভিডিও ভাইরাল হয়।
এলাকার লোকজনের ভাষ্য, মুঠোফোন থেকে জোর করে মেমোরি কার্ড খুলে নিয়ে ভিডিও ভাইরাল করার ঘটনায় বিপুল চন্দ্র গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মা উজালী রায় বলেন, ‘মাথার সমস্যার কারণে আমার ছেলে বিষ পান করেছিল। দুই দিন ধরে সে বাড়িতে নেই। আমার ছেলে কারও ভিডিও ধারণ করেনি।’
বদরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফ আলী বলেন, ‘মেয়েটি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়ায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। তবে কেন আত্মহত্যা করেছিল, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। ভিডিও ছড়ানোর বিষয়ে আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সূত্র- প্রথম আলো
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷