সনাতন নিউজ২৪.<> ঢাকা বাংলাদেশ সোমবার „১৫ মার্চ ২০২১„ বাবা দিনমজুর। ছোট বেলায় মা চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সৎ মায়ের মাঝে বেড়ে ওঠা লতা রায়ের। নীলফামারীর সদর উপজেলার গোড়গ্রাম নিজপাড়া এলাকার দিনমজুর জগেন রায়ের এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে বড় লতা রায় (২০)। দিনমজুর বাবার অভাব অনাটনার সংসারে লতা রায়ের পড়ালেখা করাটাই ছিল বড় কঠিন। তারপরেও অভাবকে হার মানেনি সে। প্রাইমারির সমাপনী পরিক্ষার পর পড়াশোনার জন্য গ্রামের বিত্তবান ও স্কুলের কয়েকজন শিক্ষকদের সহযোগিতার টাকা দিয়ে ২০১৭ সালে গোড়গ্রাম স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এস.এস.সি পরিক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান শাখায় অ+ পান লতা রায়। পরবর্তীতে এইচ.এস.সি পরিক্ষায় অংশ নিতে গোড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের আর্থিক সগযোগিতায় নীলফামারী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়। এবং গেল বছরের অক্টোবরে অটোপাস ঘোষনা করেন সরকার। এইচ.এস.সি রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পর ডাক্তার হওয়ার আশা বুকে নিয়ে মানুষ মানুষের জন্য নামে ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় ঢাকায় ৩ মাস কোচিং চালিয়ে যান লতা রায়। ফাউন্ডেশনের দেওয়া টাকায় ঢাকায় কোন রকম দিন চললেও ওষুধ খাওয়ার টাকা সংকট হয়ে পড়ে যায়। এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন লতা রায়। ফিরে আসেন গ্রামের বাড়িতে। বাড়িতে অভাবের সংসারে এসে তার ওষুধ কিনতে ব্যর্থ হয় দিনমজুর বাবা। ভিক্ষা বা হাত পেতে জীবন চালাতে চান না লতা। তাই ওষুধ ও একবেলা খাবার খেতে একজন নারী হিসেবে নিজের শরীরকে পর্দানশীল রেখে বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের পথ বেচে নেন লতা রায়। এ বিষয়ে লতা রায়ের সঙ্গে কথা হলে জানা যায় তার পড়াশোনা করে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার ইচ্ছা। তাই অভাবকে হার মানিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে সে। লতা বলেন, আমার পরিবারে আমি বড় সন্তান (মেয়ে) হওয়ায় রোজগার করার সক্ষমতা হাড়াতে চাইনা। তাই চলতি মাসের ৬ তারিখ থেকে বাদামের ব্যবসা শুরু করেছি। তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরনে সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন লতা। এ বিষয়ে গোড়গ্রাম ইউ’পি চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, লতা রায়ের বাবা একজন দিনমজুর,অভাবের কারনে সে এই পথ বেচে নিয়েছে। আমিও তাকে ইউনিয়ন পরিষদের থেকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছি।’’
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷