[পুলিশ সুপার (এএসপি) উর্মী দেবকে বিয়ে করেছেন উপ-পরিদর্শক (এস আই) উজ্জ্বল ঘোষ জিতু।
ছবি : সংগৃহিত
ভাইরাল হওয়ার পর তাদের প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ। তাদেরকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই।
ওই পোস্টে উপ-পরিদর্শক (এস আই) উজ্জ্বল ঘোষ জিতু লিখেন, পুলিশিং পেশার ব্যাপারে যাদের একটু ধারণা আছে তারা বলতে পারবেন অবস্থানগত দিক থেকে আমার সহধর্মিণীর অবস্থান আমার থেকে কতটা উপরে। না, আমাদের বিয়ের পর আমাদের কারও চাকরি হয়নি। আমার আর আমার সহধর্মিণীর অবস্থানের এই আকাশ পাতাল পার্থক্যের তোয়াক্কা না করে এই দেবীতুল্য মানুষটা আমাকে আপন করে নিয়েছিলেন। যখন অহরহ পোষ্ট দেখি মেয়েরা লোভী হয়, মেয়েরা বিসিএস স্বামী খুঁজে পেলে সব ছাড়তে পারে, মেয়েরা টাকা আর অবস্থান ছাড়া আর কিছু বোঝে না আমার তখন খুব হাসি পায় মায়ের জাত নিয়ে কি আমাদের চিন্তাধারা এটা ভেবে। একজন বিসিএস কর্মকর্তা যে কিনা আমার মত একজন সামান্য মানুষকে এতটা আপন করে নিয়েছেন তিনিও তো একজন মেয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপ-পরিদর্শক (এস আই) উজ্জ্বল ঘোষ জিতু ও তার স্ত্রী পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) উর্মী দেব দম্পতির বিয়ে হয়েছে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। নিজেদের পছন্দ হলেও তাদের বিয়ে হয়েছে পারিবারিক ভাবে।
এই বিষয়ে উপ-পরিদর্শক (এস আই) উজ্জ্বল ঘোষ জিতু জানান, তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে। পিতা ছিলেন একজন পরিবহন ব্যবসায়ী। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে জিতুই বড়। উপ-পরিদর্শক পদে যোগদান করতে তিনি ট্রেনিং শুরু করেন ২০১৮ সালে ২৭ জানুয়ারিতে। পুলিশের ট্রেনিং শেষ করেন ২০১৯ সালে। এর আগে থেকেই পরিচয় ছিলেন এএসপি উর্মী দেবের সাথে। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারিতে এসআই পদে উজ্জ্বল ঘোষ জিতুর পুলিশের চাকরি নিশ্চিত হয়। এরই মধ্যে দুইজনের মাঝে মাঝে আলাপ আলোচনা হয়। একপর্যায়ে একে অপরকে পছন্দ করেন। বিষয়টি যার যার পরিবারকে জানালে পরিবারের সদস্যরা আলাপের পর ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়।
তিনি বলেন, অন্যান্য পোস্টের মতো ফেসবুকে পোস্টটি দিয়েছিলাম। পোস্টটি এভাবে ভাইরাল হবে আমি বুঝতে পারিনি। তবে বিষয়টি মানুষ পজিটিভলি নিয়েছে। আমরা ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সুখী। আমার স্ত্রীও খুব ভাল মানুষ। তার সত্যতার কোন কমতি নেই। আমার মতো একজন নগন্য মানুষকে বিয়ে করে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি আসলেই কতটা নির্লোভ ও নিরহংকার।
এই বিষয়ে উপ-পরিদর্শক আখাউড়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) উর্মি দেব বলেন, আমার বাবার বাড়ি চট্রগামে। আমার বাবা একজন আইনজীবী, এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে আমিই বড়। বিসিএসের পর এএসপি পদে চাকরি জীবনের প্রথম পোস্টিং আখাউড়া সার্কেলেই। ছবিটি সে (জিতু) আমার অফিসে এসে তুলেছিল। ছবির বিষয়ে আমার আত্মীয় স্বজন ও সহকর্মীরা ফোন করে জানিয়েছেন। আমার স্বামীর সাথে চাকরিতে যোগদান করার পর পরিচয়। কর্মজীবন আর ব্যক্তিগত জীবন আলাদাভাবে চালাতে হয়। যেন একটির কারণে আরেকটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। একই পেশায় দুইজন থাকলে ভাল হয়, একজন আরেকজনেরটা সহজে বুঝতে পারেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এএসপি উর্মি দেব বলেন, আমরা যখন বিয়ে করি তখন দুইজনই চাকরিজীবী। আমরা বুঝে শুনেই বিয়েতে সম্মত হয়েছি। তাই আমাদের কোন সমস্যা হবে না বলে প্রত্যাশা করছি।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷