Breaking News

দিনাজপুরের কাহারোলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সমাধি ভাঙার প্রতিবাদে মানববন্ধন


দিনাজপুরের কাহারোলে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান ও কালিমন্দিরের জায়গায় সমাধি ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারি ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড) রমিজ আলমের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ওই এলাকার প্রায় ২ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুরা।
১৯ ডিসেম্বর বেলা ২টায় কাহারোল উপজেলা বাজার আম তলা মোড়ে 
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নেতৃবৃন্দ 
বাংলাদেশ পূজা উযাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ কাহারোল উপজেলা শাখার আয়োজনে ও রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাকার সভাপতি শ্রী সুনিল চক্রবতী। অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জিব রায়, কাহারোল উপজেলা শাখার পুজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি রাজেন্দ্র দেবনাথ, সাধারন সম্পাদক সুকুমার রায়, প্রচার সম্পাদক মহেন চন্দ্র রায়, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নির্মল কুমার রায় প্রমুখ। বক্তব্যে প্রধান অতিথি সহকারী কমিশনার (ভূমি) রমিজ আলমের ১৫দিনের মধ্যে অপসারনের দাবি জানান।

মানববন্ধনে জানানো হয়, উপজেলার সাহাপাড়া মৌজার জেএল নং ১০৬, খতিয়ান নং এসএ-২, দাগ নং ১৯১, রকম ডাঙ্গা, পরিমান ৬.৮৮ একর জমির উপর গত ৬০ বছর যাবত দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর শ্মশান ও কালিমন্দিরে পূজা অর্চনা এবং সমাধি (দাহকাজ ও যারা দাহ করতে পারেন না বা করেন না) দিয়ে আসছেন। কিন্তু প্রশাসনের যোগসাজশে কতিপয় ব্যক্তি শ্মশান ও কালিমন্দিরের জায়গা নিজ নামে লিজ বা পত্তন নেওয়ার জন্য পায়তারা করছেন। ইতোমধ্যে সেই স্থানে একটি মহল লাঠিসোঠাসহ অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে দখল নিতে গেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বাঁধা দেয়। এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়, যা চলমান রয়েছে।
এরইমধ্যে মামলা চলাকালীন অবস্থায় শ্মশান ও কালীমন্দির কমিটির সদস্য পরিমল চন্দ্র রায় বর্ণিত সম্পত্তির কোন প্রকার লিজ বা পত্তন দিতে না পারেন সেজন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার জন্য দিনাজপুর কাহারোল সহকারি জজ আদালতে প্রার্থনা করা হয়। যার মোকদ্দমা নং ১০০/২০১৯।
সরকারের পক্ষে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র প্রতি দে:কা:বি: আইনের ৩৯ অর্ডার ১নং রুলে ইভডেভিট করে মামলা চলাকালীন অবস্থায় বর্ণিত সম্পত্তির কোন প্রকার লিচ বা পত্তন দিতে না পারেন সেজন্য এই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন তিনি। কিন্তু গত ১২ নভেম্বর ওই ৪ কর্মকর্তাকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করে। তবে তারা আদালতে হাজির হননি। পরে আদালত আগামী ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারী পর্যন্ত ওই সম্পত্তির উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এরপরেও আদালতের আদেশ অমান্য করে গত ৮ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে শ্মশান ও কালিমন্দিরের জায়গায় প্রবেশ করে কাহারোল উপজেলা সহকারি ভূমি কমিশনার রমিজ আলম হিন্দু সম্প্রদায়ের সমাধি ভাংচুরসহ ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এ অবস্থায় অত্র এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুল হাসান বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এটি সত্যি। কিন্তু একটি পক্ষ ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মানুষ না মরলেও সমাধি বানিয়ে জমিটি দখলের চেষ্টা করছে। তাই এসিল্যান্ড গিয়ে বানানো সমাধি ভেঙ্গে দিয়েছে

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷