হিন্দু বসতবাড়ির দখল নিতে এক হিন্দু বাড়ীতে হামলা ও ভাঙচুর ।সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছে প্রতিপক্ষ দুর্বৃত্তরা।
তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি পয়:নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত পায়খানাটিও। দুর্বৃত্তদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন গৃহকর্তা দীনবন্ধু পাল ও তার স্ত্রী বিথীকা রানী পাল।
নড়াইল জেলা ঘটনাটি ঘটেছে, এ ঘটনায় কালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এ পর্যন্ত অজ্ঞাত কারণে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি। তবে সংখ্যালঘু পরিবারের নিকট থেকে চাপ দিয়ে আরেকটি মিমাংশা পত্র নড়াইলের কালিয়া থানা পুলিশ নিয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সিলিমপুর গ্রামের দীনবন্ধু পাল সিলিমপুর মৌজার ১১৩৯ ও ১১৪০ দাগের ২২ শতাংশ নিজস্ব জমিতে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবত শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন।
কিছুদিন পূর্বে প্রতিবেশি সুভাসের নিকট থেকে একই গ্রামের প্রভাবশালী মো.ইকবাল মোল্যা তার বসতবাড়ির পশ্চিমপাশের একখন্ড ফাঁকা জমি ক্রয় করে। উক্ত জমি ক্রয়ের পর থেকে সে দীনবন্ধুর বসতবাড়ির একটি অংশ দখল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পায়তারা চালিয়ে আসছিল। এমনকি ওই ঘর-বাড়ি ছেড়ে দিয়ে দীনবন্ধুকে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে আসছিল ইকবাল। এর জের ধরে ঘটনার দিন সোমবার আনুমানিক নয়টার দিকে দীনবন্ধুর বসতবাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে ইকবাল তার সঙ্গীয় লোকজন নিয়ে অতর্কিতভাবে তার বাড়িতে চড়াও হয়।
তারা ওই বসতবাড়ির সীমানার ঘের-বেড়া উপড়ে ফেলে ও ঘর-বাড়ি ভাঙ্গা শুরু করে। এ সময় দীনবন্ধুর স্ত্রী বিথীকা রানী পাল দুর্বৃত্তদের নিবৃত করতে এগিয়ে এলে তারা তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে ও গলাধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। এ ঘটনা দেখে দীনবন্ধু পাল ঘর থেকে বেরিয়ে তাদের নিকট এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কিল, ঘুসি মারে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করলে তিনি দৌঁড়ে গিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে দরজা বন্ধ করে চিৎকার করতে থাকে। চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী লোকজন ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার করে তাকে বাড়ির বাইরে যেতে সহায়তা করে। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি পয়:নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত পায়খানাও।
এ সময় দুর্বৃত্তরা সীমানা ছেড়ে দীনবন্ধু পালের বসতবাড়ির উঠানের মাঝ বরাবর বেড়া তৈরি করে দিয়েছে। এ ঘটনায় দীনবন্ধুর স্ত্রী বিথীকা রানী ওইদিনই মো.ইকবাল মোল্যাসহ ১৪জনকে আসামী করে কালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযোগ দায়েরের পর এ পর্যন্ত পুলিশ অজ্ঞাত কারণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি। এদিকে থানায় অভিযোগ করার কারণে প্রতিপক্ষ দুর্বৃত্তরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে সংখ্যালঘু ওই পরিবারের ওপর।
বাড়ির চারপাশে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্রসহ ঘোরাফেরা করছে দুর্বৃত্তরা। তাদের পায়খানায় যাওয়ার পথও তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে প্রভাবশালী ইকবাল। বর্তমানে পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে মোঃ ইকবাল মোল্যার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। সোমবার (২ডিসেম্বর) সকালে নড়াইলের কালিয়ায় উপজেলার সিলিমপুর গ্রামে। এ বিষয়ে নড়াইলের কালিয়া থানার অফিসার ওসি (তদন্ত) মো. মো.ইকরাম হোসেন জানান যেহেতু জমি-জমা বিক্রয় সংক্রান্ত বিষয় জড়িত সেহেতু ঘটনাটি তদন্তের জন্য একজন অফিসার প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷