মহিলা পুরোহিত দিচ্ছেন বিয়ে, অনুষ্ঠান দেখতে হাজির উত্তর দিনাজপুর রায়গঞ্জের বাসিন্দারা
সনাতন নিউজ২৪.<> ঢাকা বাংলাদেশ
রবিবার , ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১,
মহিলা পুরোহিত দিচ্ছেন বিয়ে, অনুষ্ঠান দেখতে হাজির উত্তর দিনাজপুর রায়গঞ্জের বাসিন্দারা
উত্তর দিনাজপুর জেলা সদর রায়গঞ্জ শহরের মোহরকুঞ্জ ভবনে এমনই এক বিবাহ অনুষ্ঠানের ছবি ধরা পরল যেখানে সুলতা মন্ডল নামে এক মহিলা পুরোহিত বিবাহ কার্য সম্পন্ন করলেন।
সমাজে নারীরা যে কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই, নারীরাও পুরুষদের সাথে সমান তালে সব কাজ করতে পারে এই বার্তা দিতেই পুরোহিতের কাজে এগিয়ে এল নারীরা। পূজা অর্চনার পাশাপাশি এবার হিন্দু রীতিমতে বিবাহের কাজও পারদর্শীতার সাথে সম্পন্ন করে দেখাল রায়গঞ্জের এক বঙ্গ তনয়া। রায়গঞ্জ শহরের মোহরকুঞ্জে এক কন্যার বিবাহ কার্য করলেন মহিলা পুরোহিত সুলতা মন্ডল । উত্তর দিনাজপুর তথা উত্তরবঙ্গে সর্বপ্রথম মহিলা পুরোহিত দিয়ে কনের বিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা ছিল রায়গঞ্জ শহরের মোহরকুঞ্জ বিবাহ অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে।
রায়গঞ্জের বাসিন্দা শিপ্রা রায়ের কন্যা ঋতুপর্ণা রায়ের বিয়ের পুরোহিতের সমস্ত কাজই করলেন সুলতা মন্ডল । বিবাহ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত থেকে অতিথি অভ্যাগত এবং পরিবারের মহিলারা গর্বিত একজন মহিলার এই পুরোহিত পেশায় যুক্ত হওয়ায়। সমাজের কোনও কাজেই যে মহিলারা আজ আর পিছিয়ে নেই এটা অনুভব করতে পেরেই গর্বিত তাঁরা।
বৈদিক গ্রন্থে কিছু নারী ঋষি বা মুনির কথা উল্লেখ আছে। একজন নারী ঋষি হওয়ার অর্থ তিনি বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে সমস্ত দেবদেবী পূজা আর্চা ও যাগযজ্ঞ করতেন। কিন্তু মধ্যযুগীয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের সেই মান মর্যাদাকে দমিয়ে রেখে সমাজের বহু জায়গা থেকে তাদের পেছনে ফেলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান আধুনিক সভ্যতার যুগে নারীরা শক্তিতে বলীয়ান হওয়ার পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে পুরুষদের সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে চলছে এযুগের নারী। এতদিন পুজো পাঠ যাগযজ্ঞ বিবাহ অন্নপ্রাশনের মতো সামাজিক মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতেন পুরোহিতেরা। যাঁরা হলেন পুরুষ। এখন থেকে সেই ধ্যান ধারণা পালটে দিয়ে সমাজের মহিলারাও এগিয়ে এসেছেন পুরোহিতের কাজে। পূজো পাঠ যাগযজ্ঞের পাশাপাশি এবার বিবাহ কার্যও সম্পন্ন করছেন মহিলা পুরোহিতেরা।
উত্তর দিনাজপুর জেলা সদর রায়গঞ্জ শহরের মোহরকুঞ্জ ভবনে এমনই এক বিবাহ অনুষ্ঠানের ছবি ধরা পরল যেখানে সুলতা মন্ডল নামে এক মহিলা পুরোহিত বিবাহ কার্য সম্পন্ন করলেন। রায়গঞ্জ বীরনগরের বাসিন্দা শিপ্রা রায়ের মেয়ে ঋতুপর্ণা রায়ের সাথে হেমতাবাদের বারইবাড়ির পাত্র ধীরেন্দ্র নাথ দে'র বিবাহে পুরোহিতের কাজ করলেন গঙ্গারামপুরের ঠ্যাঙাপাড়ার মহিলা পুরোহিত সুলতা মন্ডল। বিয়ের অধিবাস থেকে শুরু করে নারায়ণ শিলার পুজো এবং বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন করলেন মহিলা পুরোহিত। মহিলা পুরোহিত সুলতা মন্ডল জানালেন সমাজে মহিলারা কোনও অংশেই কম নয়, তারাও যে পুরুষদের সাথে সমান তালে সব কাজ করতে পারে এই বার্তা দিতেই তিনি পুরোহিতের পেশাকে বেছে নিয়েছেন।
মহিলা পুরোহিত দিয়ে নিজের বিয়ে হওয়া প্রসঙ্গে পাত্রী ঋতুপর্ণা বলেন, আমি নিজে একজন মেয়ে হয়ে পরিবার চালাতে চালাই। যে আমাকে জন্ম দিয়েছেন, বড় করে তুলেছেন সেও একজন মহিলা। একজন মহিলা পুরোহিত তাঁর বিবাহ কার্য সম্পন্ন করাতে তিনি যেমন খুশি, তেমনই গর্বিত। ঋতুপর্ণার মতো খুশি তাঁর পরিবার ও আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব। পাত্র রাজা দে জানান, বিয়ের আগেই দু’জনে আলোচনা করে মহিলা পুরুহিত দিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।বিয়ে বাড়িতে যারাই আসছেন তাদের বিয়ে দেখার খুব কৌতুহল। কারণ জেলায় তিনি প্রথম মহিলা পুরোহিত দিয়ে বিয়ে করছে।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। দেশের রাষ্ট্রপতি মহিলা ছিলেন।যদি মহিলারা এই কাজ দায়িত্বের সঙ্গে করতে পারেন তবে পৌরোহিত্য করার ক্ষেত্রে আপত্তি কোথায়। তাদের দেখে আরও বেশী সংখ্যায় মহিলা পুরোহিতকে ব্যবহার করেন সমাজের কাছে এই আবেদন করে রাজাবাবু।
নিউজটি শেয়ার করুন
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷