কক্সবাজারের খুরুশকুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলে নিলো সার্ভেয়ার জাহাঙ্গির ও সুমন
সনাতন নিউজ২৪.<> ঢাকা বাংলাদেশ
কক্সবাজারের খুরুশকুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলে নিলো সার্ভেয়ার জাহাঙ্গির ও সুমন
রকারের নামে কক্সবাজার শহরতলীর খুরুশকুল ইউনিয়নে দরিদ্র সংখ্যালঘুর জমি দখল করলো সার্ভেয়ার জাহাঙ্গির ও ভূমি অফিসের কর্মচারি সুমন। শতবর্ষ ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘু রুদ্র সম্প্রদায়ের দখলে থাকা জোত জমিসহ খাস জমি মধ্যরাতে দখল করে কাঁটাতারের বেড়াও দিয়েছে তারা। উচ্ছেদ আতঙ্কে রুদ্র সম্প্রদায়ের নীরিহ লোকজন বর্তমানে প্রায় নিদ্রাহীন জীবন-যাপন করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক পুরুষ শতবর্ষাধিক কাল ধরে রুদ্র পাড়ায় বসবাস করছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী দরিদ্র রুদ্র সম্প্রদায়ের লোকজন। নিজেদের মালিকানাধীন জোত জমিসহ সংলগ্ন খাস জমিতে পান চাষের পাশাপাশি মাটির হাঁড়ি, পাতিলসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি দ্রব্য তৈরি করে জীবীকা নির্বাহ করেন তাঁরা। হঠাৎ করেই সার্ভেয়ার জাহাঙ্গির এবং সুমনের সেই জমির উপর কু-নজর পড়ে। সরকারি জমি দাবি করে ভূমি পরিমাপের নামে ইতোমধ্যেই রুদ্র সম্প্রদায়ের লাগানো বেশ কিছু মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যায় তারা। পাশাপাশি জমির বিরাট অংশ দখল করে কাঁটাতারের বেড়া দেয়। দরিদ্র রুদ্র সম্প্রদায়ের লোকজন এতে বাধা দিলে তাঁদের পুলিশ দিয়ে হয়রাণি করার হুমকি দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বংশ পরম্পরায় রুদ্র সম্প্রদায়ের দখলে থাকা সাড়ে ৫ একর জমি ইতঃপূর্বে বন বিভাগের নামে ছিলো। পরবর্তীতে সেই জমি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়। কাগজে কলমে জমির মালিকানা পরিবর্তন হলেও ভোগ দখলে রুদ্র সম্প্রদায় কখনো বাধার সম্মুখীন হয়নি। ফলে তাঁদের জীবীকার একমাত্র অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায় এই জমি। কিন্তু হঠাৎ করে সরকারের নামে সার্ভেয়ার জাহাঙ্গির এবং সুমনের জমি দখলের কারণে তাঁদের মাথায় এখন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।
রুদ্র সম্প্রদায়ভুক্ত প্রমু পাল বলেন, জমিগুলো ছাড়া আমাদের সম্প্রদায়ের আয়ের আর কোন উৎস নেই। খুরুশকুলে আরো অনেক জমি রয়েছে। আমরা দরিদ্র বলেই আমাদের জমি কেড়ে নেয়া হচ্ছে। বাপ-দাদাসহ কয়েক পুরুষের ভোগ দখলীয় জমি তো যাচ্ছেই। এখন জোত জমি রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। আমরা এর বিচার চাই।
এদিকে জমি দখলের ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গতকাল বিকেলে এলাকাটির অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ সংসদ-সদস্য কানিজ ফাতেমা আহমেদ এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তাঁদের লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। এ সময় কানিজ ফাতেমা আহমদ এমপি তাঁদের অভয় দিয়ে বলেন, “ জননেত্রী শেখ হাসিনা কাউকে গৃহহীন করবেন না।” এ সময় তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দেয়া ২০টি কম্বল রুদ্র সম্প্রদায়ের নারীদের মাঝে বিতরণ করেন। এরপর মোস্তাক আহমদ চৌধুরী তাৎক্ষণিকভাবে দখলে অভিযুক্ত সুমনকে ফোন করে এই ধরনের কর্মকা- বন্ধ রাখার আহবান জানান।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷