Breaking News

ইসকন আইনজীবি গ্লোবাল সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৩০ জন আইজীবী ইসকন ভক্ত অংশগ্রহণ করেন।

সনাতন নিউজ২৪.  
আমেরিকার ফ্লোরিডার গেইন্‌সভিলের ঐতিহাসিক টমাস সেন্টারে ইসকন আইনজীবি গ্লোবাল সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৩০ জন আইজীবী ইসকন ভক্ত অংশগ্রহণ করেন। সামনের সারির বাম হতে ডানে- গাবরিয়েল টোলন (আয়ারল্যান্ড), রসিকানন্দ দাস (হাঙ্গেরী), দেবকীনন্দন দাস (সিঙ্গাপুর), শেষ দাস (যুক্তরাষ্ট্র), গুরু গৌরাঙ্গ দাস (যুক্তরাষ্ট্র), আত্মারাম দাস (নাইজেরিয়া), জন পটেমকিন (যুক্তরাষ্ট্র), মহা বলরাম দাস (রাশিয়া), ২য় সারির বাম হতে ডানে-বাণীনাথ বসু দাস (যুক্তরাষ্ট্র), বিনয়তন্ন (যুক্তরাজ্য), অক্রানাথ দাস (যুক্তরাষ্ট্র), নবীন শ্যাম দাস (যুক্তরাষ্ট্র), বলভান্ত দাস (যুক্তরাষ্ট্র), অনুপম দাস (নেদারল্যান্ড), ব্রজ-গোপাল দাস (ইউক্রেন); ৩য় সারির বাম হতে ডানে- সাধুজনন্দ দাস (ইউক্রেন), একনাথ কৃপা দাস (উগান্ডা), অনুজগাই (যুক্তরাজ্য), অভিষেক সিং (যুক্তরাষ্ট্র), গোবিন্দ দেব দাস (যুক্তরাষ্ট্র); ৪র্থ সারির বাম হতে ডানে- রাধা দেবী দাসী (যুক্তরাষ্ট্র), কুন্তিদেবী দাসী (যুক্তরাষ্ট্র), গীতা গোবিন্দ দেবী দাসী (নেদারল্যান্ড), শ্যামপ্রিয় দেবী দাসী (ব্রাজিল), ইভেলিনা ট্রুকসিনি (লিথুনিয়া), ৫ম সারির বাম হতে ডানে-নব দেবী দাসী (সুইজারল্যান্ড), বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী দাসী (যুক্তরাষ্ট্র), কুমারী কুন্তি দেবী দাসী (যুক্তরাষ্ট), নীলাম্বরধর দেবী দাসী (রাশিয়া); উপরের সারির বাম হতে ডানে লীলাসুখ দেবীদাসী (যুক্তরাষ্ট্র), হ্লাদিনীশক্তি দেবীদাসী (যুক্তরাষ্ট্র)।
এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় ইস্‌কন ল’ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে। ইস্‌কন ল’ ডিপার্টমেন্টটি ২০১৮ সালে ভারতের কানপুরে অনুষ্ঠিত জিবিসি’র মিডটার্ম সভায় গঠন করা হয়। এই ডিপার্টমেন্টের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিঙ্গাপুরের ইসকন আইনজীবী ভক্ত শ্রীপাদ দেবকীনন্দন দাস। পরমেশ^র ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও জগৎগুরু শ্রীল প্রভুপাদের প্রতি সমগ্র বিশ^জুড়ে অবস্থিত আইনজীবী ভক্তবৃন্দের সম্মিলিত সেবা সম্পাদন করা এবং ইসকন ভক্তদের প্রয়োজনীয়তা পূরণার্থে আইনী সেবা প্রদানকারী ভক্তদের একীভূত নেটওয়ার্কের বিকাশ সাধন করা- এই দু’টি উদ্দেশ্যে ইস্্কন আইনজীবী গ্লোবাল সম্মেলনটি আয়োজিত হয়। ইস্‌কনের মন্দির, ডিভিশন, জোনাল লেভেলে এমনকি জিবিসি লেভেলেও যেকোন প্রকার আইনী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের যথাযথ ও সময়োচিত আইনী পরামর্শ দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই আইন বিভাগ কাজ করছে।
জোনারেল কাউন্সেল শ্রীপাদ দেবকীনন্দ দাস অতীতে ইস্‌কনকে যে সমস্ত আইনী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে তা আলোচনা করে সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন। অতঃপর প্রত্যেকে ভবিষ্যতে আইনী সহায়তার যৌক্তিতা সম্পর্কে ঐক্যমত পোষণ করেন। তিনি সমবেত ভক্ত আইনজীবীদের স্মরণ করিয়ে দেন যে, যদিও ইস্‌কন সম্পূর্ণভাবে একটি পারমার্থিক সংগঠন তথাপি সমগ্র বিশ্বজুড়ে সকল প্রকার স্থানীয় সরকার ও জাতিসমূহের দ্বারা আরোপিত অগণিত আইনী প্রয়োজনীয়তাগুলি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও সময়োচিত সহায়তার জন্য অবশ্যই এই জড় জগতে কাজ করা উচিত। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ইস্‌কনের সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করতে, সম্ভাব্য দায়বদ্ধতা সীমাবদ্ধ করতে, দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করতে এবং ইস্‌কন নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করতে এই ডিপার্টমেন্ট যথাযথ ভূমিকা রাখবে। এই সম্মেলনটি গুরু গৌরাঙ্গ দাসের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়, যিনি ইস্‌কন আইন বিভাগটি গঠন করতে অক্লান্ত প্রয়াস করেছিলেন। অতি সম্প্রতি তিনি নিউ ইয়র্ক সিটির  ইস্‌কনের রাধাগোবিন্দ মন্দির বিক্রয় রোধ করতে এবং ইস্‌কন হতে মন্দিরের অধিভূক্তি বাতিলকরণ বোধ করতে অত্যন্ত প্রশংসনীয় আইনী সহায়তা প্রদান করেছিলেন। সম্মেলনে আরো বক্তব্য প্রদান করেন রাশিয়া হতে আগত হরেকৃষ্ণ আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী শ্রীপাদ মহা বলরাম দাস। তিনি রাশিয়ায় মন্দির স্থাপন, হরিনাম সংকীর্তন, গ্রন্থ মুদ্রণ ও বিতরণসহ সকল ভক্তিমূলক সেবা সম্পাদনে সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সাথে সাথে কীভাবে তাঁরা সেই সব মোকাবেলা করেন তাও ব্যাখ্যা করেন। ভবিষ্যতে আইনী উপযোগিতার আবশ্যকতাও তুলে ধরেন। শ্রীমতি রাধা দেবী দাসী ইস্‌কনের বাইরে ধর্মীয় সংগঠনগুলোতে শিশু নির্যাতন বিষয়ক যে আইনী অভিযোগ উত্থাপিত হয়ে আসছে তাতে ইস্‌কনের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের উপর জোর প্রদান করেন। তাঁর এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানান উত্তর আমেরিকা হতে আগত শ্রীমতি লীলাসুখ দেবী দাসী। বিশিষ্ট ব্যারিস্টার ফার্নান্দো ডেল ক্যান্টেব ইস্‌কনের জ্ঞানসম্পদ (ট্রেডমার্ক ও কপিরাইটযুক্ত সামগ্রী) সুরক্ষার কৌশল নিয়ে লন্ডন হতে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান করেন। ব্রজবিহারী দাস (ইস্‌কন রিসলভ এর পরিচালক) এবং মেরি রোউ (এম আই টি রিজনেস স্কুলের অধ্যাপক) উভয়েই শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতা যথাযথ এর মাধ্যমে মূল্যবোধ ও বিশ্বাস ভিত্তিক দ্বন্দ্ব নিরসণের কথা উল্লেখ করেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা ইস্‌কনের যোগাযোগ মন্ত্রী শ্রীপাদ অনুত্তম দাস বিবৃতি দিয়েছিলেন, কীভাবে ইস্‌কন “জনমত বিচারের আদালতে” পরিণত হতে পারে। ইস্‌কনকে সহায়তা করতে আইন বিভাগ ও যোগাযোগ বিভাগেকে একত্রে কাজ করার সুবিধার বিষয়ে তিনি জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। লন্ডন হতে আগত বিনয়তন্ন একটি পূর্ণাঙ্গ “উন্মুক্ত ফোরাম” তৈরি করে নিয়ে এসেছিলেন, যাকে সম্মেলনে উপস্থিত সবাই খুবই অসাধারণ অভিজ্ঞতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
পরিশেষে, দেবকীনন্দন প্রভু সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে সম্মেলনের আয়োজক গুরু গৌরাঙ্গ দাস ও সমন্বয়কারী কুমারী কুন্তী দেবী দাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। হরেকৃষ্ণ!

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷