ঢাকার দোহারে তপন কর্মকার,স্বর্ণ ব্যবসায়ী হত্যা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ,এএসপি জহিরুল ইসলাম ও হিন্দু মহাজোট
সনাতন নিউজ২৪.
ঢাকার দোহারে তপন কর্মকার (৪৫) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন দোহার সার্কেলের এএসপি জহিরুল ইসলাম, দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেন, ওসি (তদন্ত) আরাফাত হোসেন সহ পুলিশের কর্মকর্তারা।
আজ সকালে ঢাকা জেলা হিন্দু মহাজোট এর মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সাথে ছিলেন ঢাকা জেলা সভাপতি উজ্জ্বল মন্ডল, হিন্দু স্বেচ্ছাসেবক মহাজোট এর সভাপতি শ্যামল ঘোষ, হিন্দু ছাত্র মহাজোট এর সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল ও দোহার উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায় জয়পাড়া বাজারে নিহতের পরিবারের একটি মার্কেট আছে। নিহতের বড় ভাই কৃষ্ণ কর্মকার প্যারালাইসিস হয়ে পঙ্গু। মার্কেটের দুটি দোকান রফিক তালুকদার পিতা চান্দু তালুকদার নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে নেয়। সেটা উদ্ধারের চেষ্টা করছিলো তপন কর্মকার। সেকারণে তপনকে হত্যা করে মার্কেট দখল করাই ছিল উদ্দেশ্য। ঘটনার রাতে তপন কর্মকারকে কোপানোকালে দুই ভাই এর স্ত্রী এগিয়ে আসলে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে অজ্ঞান করে তপন কর্মকারকে হত্যা করে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে কাধে করে তুলে নিয়ে হাত পা বেঁধে প্রায় কোয়ার্টার মাইল গিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষন করে জঙ্গলাকীর্ণ ডোবায় ফেলে রেখে যায়।
নিহতের ও ধর্ষিতার পরিবার আসামিদের চিনলেও স্ববংশে খুনের ভয়ে হত্যাকারীর ও ধর্ষকদের নাম ও ধর্ষনের বিষয়টি গোপন করছে।
এসময় নিহত ব্যবসায়ীর বড় ভাই কৃষ্ণ কর্মকারের স্ত্রীমনি কর্মকারকে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে তুলে নিয়ে যায় তারা। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার জয়পাড়া বাজারের পাশে পূর্ব লটাখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বুধবার (১৫ জুলাই) সকালে বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে ওই গৃহবধূকে হাত পা বাঁধা অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
নিহত তপন কর্মকার উপজেলার পূর্ব লটাখোলা গ্রামের মৃত গোপাল কর্মকারের ছেলে। লটাখোলা এলাকায় তার একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে।
তপনের বড় ভাই কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আমি বাড়িতে খাবার খাচ্ছিলাম। আমার স্ত্রীও আমার সঙ্গে ছিল। অন্যরা যার যার ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। এমন সময় মুখোশ ও রেইনকোট পরিহিত কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাড়ির সামনের প্রধান ফটক খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। তাদের হাতে রাম’দা ছিল। আমাদের চিৎকারের শব্দ পেয়ে আমার ছোট ভাই তপন কর্মকার ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের কোপে আমার ভাইয়ের পেটের বিভিন্ন অংশ বেরিয়ে আসে এবং হাতের একটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে দুর্বৃত্তরা আমার স্ত্রীকে মুখে চেপে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
দুর্বৃত্তরা চলে যাবার পর কান্না-চিৎকারের শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তারা গুরুতর আহত তপনকে উদ্ধার করে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকায় প্রেরণ করেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পরপরই দোহার থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে, বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পূর্ব লটাখোলা এলাকারই ঝোপের একটি ডোবায় হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ওই গৃহবধূকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। মনি কর্মকার নেকটা সুস্থ রয়েছেন।
শেরার করুন...
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷