Breaking News

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় শিকলে তালাবদ্ধ প্রতিবন্ধী মেয়েটির পাশে দাঁড়াল প্রশাসন

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় শিকলে তালাবদ্ধ প্রতিবন্ধী মেয়েটির পাশে দাঁড়াল জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। আজ শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে নগদ অর্থ, ভ্যানগাড়ি, স্থায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা ও সরকারিভাবে একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া মেয়েটিকে প্রতিবন্ধীর কার্ডের বিনিময়ে টাকা ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘প্রতিবন্ধী মেয়েটির চার হাত-পা চার শিকলে তালাবদ্ধ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে শেরপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনারকলি মাহবুবের। তিনি ইউএনওকে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের কয়রাকুড়ি গ্রামে ইউএনও প্রথম আলোর প্রতিবেদককে সঙ্গে নিয়ে ওই প্রতিবন্ধী মেয়ের বাড়িতে হাজির হন। এ সময় মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম বাড়ির পাশেই ছিলেন। প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার কারণে আজ তিনি কাজে যাননি। মেয়ের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তালাবদ্ধ ঘর দেখিয়ে দেন। পরে তালা খোলে ঘরে ঢুকলে দেখা যায় তাসলিমা বেগম (১৮) মেঝেতে শুয়ে আছে। দুই হাত দুই পাশে শিকলে তালাবদ্ধ। ঘরে মানুষ দেখে ফ্যালফ্যাল করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন সে। এ সময় তাসলিমার বড় দুই ভাই উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও প্রতিবন্ধী তাসলিমার প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তার মায়ের মার হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন। এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ভ্যানগাড়ি দেওয়া হয়। এ ছাড়া মেয়েটিকে স্থায়ী চিকিৎসার পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
এ সময় প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য এক নারী ইউপি সদস্যের স্বামীর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার বিষয়টি মা মনোয়ারা ইউএনওকে জানান। ইউএনও মরিচপুরান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার শফিক আহমেদকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। এবং দ্রুত টাকা ফেরত দিতে বলেন, তা না হলে লিখিত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।
এ ব্যাপারে মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আল্লাহ আপনে গরে বাঁচাইয়া রাখুক। মেয়েডারে লইয়া বিরাট বিপদে আছি। ইউএনও স্যার নগদ ৫ হাজার টাকা দিছেন ,একটা ভ্যানগাড়ি দিছেন। মেয়েকে পাগলাগারদে ভর্তির ব্যাপারে তিনি চেষ্টা করবেন বলে জানাইছেন।’
ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার শফিক আহমেদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ওই মেয়ের কাছ থেকে সম্ভবত প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যের স্বামী তিন হাজার টাকা নিয়েছেন। আজ দিনের মধ্যে তাঁকে টাকা ফিরত দিতে বলা হয়েছে।
ইউএনও আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল প্রথম আলোর অনলাইনে নিউজটি জেলা প্রশাসক(ডিসি) মহোদয়ের নজরে আসে। পরে স্যারের নির্দেশে ওই বাড়ি গিয়ে তাদের পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ভ্যান গাড়ি দেওয়া হয়েছে। ঘর এলে তাদের একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ছাড়া মেয়েটাকে স্থায়ী চিকিৎসায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷