হিন্দু নির্যাতনের রিপোর্ট পেশ ও নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবীতে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সংবাদসম্মেলন
হিন্দু নির্যাতনের রিপোর্ট পেশ ও নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবীতে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সংবাদসম্মেলন
২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ২০১৯ সালে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ মন্দির প্রতিমা ভাংচুর, হিন্দু বাড়ী ঘরে অগ্নি সংযোগ, লুঠ-পাট, খুন, নারী অপহন, দেশ ত্যাগে বাধ্যকরন সহ নানা অত্যাচারের রিপোর্ট পেশ করেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সিনিয়র সহ সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, যুগ্ম মহাসচিব মনিশঙ্কর মন্ডল, আইন সম্পাদক সুব্রত হালদার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অমিও বাউল, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহিলা মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক সাগরিকা মন্ডল, উত্তরবঙ্গ সমন্বয়ক দুলাল কর্মকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট এর সভাপতি কিশোর কুমার বর্মন,সিনিয়র সহ-সভাপতি অরুপ রায়, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজেটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, দপ্তর সম্পাদক তপু কুন্ডু, ডাঃ মনোরঞ্জন হালদার প্রমূখ।
লিখিত রিপর্টে উল্লেখ করেন ২০১৯ সালের জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৩৬৫ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সরকার দলীয় নেতা কর্মী সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকদের দ্বারা এবং প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে হামলা লুঠপাট সহ নানা ঘটনা ঘটেছে।
২০১৯ সালের জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারে প্রকাশিত এবং বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের জেলা, থানা নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ৬৮৩টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩১,৫০৫ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং ৯,৫০৭.২২ একর ভূমি জবর দখল হয়েছে।
হত্যা করা হয়েছে ১০৮ জনকে, হত্যার হুমকী দেওয়া হয়েছে ১১১ জনকে, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ৮৮ জনকে, আহত করা হয়েছে ৪৮৪ জনকে, নিখোঁজ হয়েছে ২৬ জন, চাঁদা দিতে হয়েছে ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা, সকল ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায় ৪৩৩ কোটি ৫৬ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার সম্পদ।
মন্দির ও বাড়ীঘর লুঠপাট হয়েছে ২৭৭ টি, হামলা হয়েছে ৩৮৭টি, অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে ৯২ টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৭৯টি, ভূমি দখল হয়েছে ৯,৫০৭ একর ২২ শতাংশ, ঘরবাড়ী বেদখল করা হয়েছে ২০টি, মন্দিরের ভূমি ৩১টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ২৭টি, দখলের তৎপরতা হয়েছে ৬৬ একর ৫৮ শতাংশ, বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ ৪৩৪ টি পরিবার, উচ্ছেদ তৎপরতা ৬৯০টি পরিবার, উচ্ছেদের হুমকী ১৬০টি পরিবার, দেশ ত্যাগের হুমকী ৬৪১টি পরিবার, দেশত্যাগে বাধ্যকরন ৩৭৯ টি পরিবারকে, নিরাপত্তাহীনতা ২২৬১ টি পরিবার, মন্দিরে হামলা, ভাংচুর অগ্নিসংযোগ ৪৪৯টি, সঙ্গবদ্ধ হামলা ১২৫টি, প্রতিমা ভাংচুর, ২৪৬টি, প্রতিমা চুরি ৩১টি, অপহরণ ৭৬ জনকে, অপহরনের চেষ্টা ৭ জনকে, ধর্ষন ৪২ জনকে, ধর্ষনের চেষ্টা ৩৪ টি, ধর্ষনের পর হত্যা ৬টি, গণধর্ষন ১৮টি, জোড়পূর্বক ধর্মান্তর ও ধর্মান্তর করনের চেষ্টা ১৪৮জনকে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ৯৯টি, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, বরখাস্ত, আসামী ১০৯ জন, অবরুদ্ধ পরিবার ১০৫ জন, মন্দির অপবিত্রকরন ৫টি, মিথ্যা রাজাকার বানানো হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা ৩৬ জনকে, পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় নিষিদ্ধ গোমাংস খাইয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ৫টি ঘটনায় ২২ জনকে।
পরিসখ্যান বলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত হিন্দু নির্যাতন বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় সর্বক্ষেত্রেই হিন্দু নির্যাতন বেড়েছে। গত বছর হত্যা হয়েছিল ৮৮জন এবার বেড়ে হয়েছে ১০৮ জন। গত বছর আহত হয়েছে ৩৪৭ এ বছর বেড়ে হয়েছে ৪৮৪ জন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গত বছর হামলা হয়েছিল ৩৫টি এবছর বেড়ে হয়েছে ৭৯টি। গতবছর বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ হয়েছিল ২১৭টি পরিবার এবছর বেড়ে হয়েছে ৪৩৪ টি পরিবার। গত বছর দেশ ত্যাগের হুমকী ছিল ২২৩ টি পরিবার এ বছর বেড়ে গিয়ে ৬৪১টি পরিবার এবং দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে ৩৭৮টি পরিবার।গতবছর নিরাপত্তাহীনতায় ছিল ১৫১০ পরিবার এবছর বেড়ে হয়েছে ২২৬১টি পরিবার। গত বছর মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছিল ১৩১টি এবছর বেড়ে হয়েছে ১৫৩টি। বাড়ীতে হামলা ভাংচুর অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছিলো ১০৮টি এবছর বেড়ে গিয়ে হয়েছে ৪৪৮টি। গত বছর ভূমি দখল ছিল ২৭৩৪.৮১ একর এ বছর বেড়ে গিয়ে হয়েছে ৯,৫০৭.২২ একর। এবছর নুতন করে ৩৬ জন হিন্দু মুক্তিযোদ্ধার গায়ে রাজকার তকমা যুক্ত হয়েছে। যদিও সরকার দুঃখ প্রকাশ করেছে তথাপি দুষ্টচক্র এই রিপোর্ট নিয়ে চিরকাল মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করবে, এখনই সন্দেহের চোখে দেখছে।
২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ব্যাপকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন হয়েছে। সেই নির্যাতনের বিষয় নিয়ে তৎকালীন ক্ষমতাশীন সরকার কোন বিচার করে নাই। বর্তমান আওয়ামী সরকার সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনা বিশ্বব্যাপী প্রচার করে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা লাভ করেছে।
হিন্দু সমাজ আশা করেছিলো বর্তমান সরকার ২০০১ সালের ঘটনা সহ সকল হিন্দু নির্যাতনের বিচার করবে; অপরাধীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু বর্তমান সরকার ১১ বছর দেশ পরিচালনা করলেও ২০০১ সালের ঘটনা সহ কোন অপরাধের বিচার করে নাই, ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য একজনেরও শাস্তি হয় নাই। তাই হিন্দু সম্প্রদায় আজ হতাশ।
এই বিচারহীনতার কারনেই অপরাধীরা বার বার হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই নিরবে আতঙ্কিত হিন্দু সম্প্রদায় দেশ ত্যাগ করছে। পরিসংখ্যান বলে দেয় এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এদেশ হিন্দু শুন্য হবে। অথচ সরকার এসব নিরসনে কোন কার্যকরী ভূমিকা রাখে নাই। সরকার মঠ মন্দির প্রতিমা ভাংচুর ও বাড়ীঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগকারীদেরকে চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে অপরাধীরা অপরাধ করতে আরও উৎসাহিত হচ্ছে।
সরকার দিন দিন মৌলবাদের প্রতি ঝুকছে। প্রশাসনেও হিন্দু বিদ্বেষ চরম আকারে। প্রতিনিয়ত হিন্দু ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করলেও আজ পর্যন্ত হিন্দু ধর্ম কটুক্তির অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা হয় নাই। উপরন্তু ফেসবুক হ্যাক করে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে শতাধিক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শত শত ঘরবাড়ী পুড়িয়ে, মঠ মন্দির ধ্বংস করে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে প্রতিনিয়ত হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে।সরকার সকল শ্রেনীর পাঠ্যপুস্তক ইসলামীকরণ করেছে। হিন্দু ছাত্র ছাত্রীদেরকে বাধ্যতমূলক ইসলাম ধর্ম পাঠ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। হিন্দু মহাজোট পাঠ্যপুস্তক অসাম্প্রদায়িক করার জোড় দাবী জানাচ্ছে। নির্বচন কমিশন বিভিন্ন সময় হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের দিনে নির্বাচনের দিন ধার্য করে।গত বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের আপত্তি সত্বেও দুর্গা পুজার দিনে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন করেছিলো। এবারও ৩০ জানুয়ারী ২০২০ সরস্বতী পুজার দিন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছে। হিন্দু মহাজোট সরস্বতী পুজার দিন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের জন্য জোড় দাবী জানিয়েছে।লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন যদিও সরকার সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে অতীতের তুলনায় যথেষ্ঠ তৎপর। তবুও দেশের বিভিন্ন স্থানে যে হারে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ চলছে, তাতে হিন্দু সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন না হয়ে পারে না।
সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় কোন কার্যকর ভূমিকা রাখে নাই। যেহেতু সরকারী দল ও বিরোধী দল এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জাতীয় সংসদে কোন কার্যকর ভূমিকা রাখেন নাই, সেকারনে এদেশের সংখ্যলঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য এবং এদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জাতীয় সংসদে ৫০ টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা দাবী করেন।হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্রের স্বার্থে জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে, হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা ও নির্যাতন নিরোধ কল্পে জাতীয় সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পূণঃ প্রতিষ্ঠা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং হিন্দু সম্প্রদায় থেকে একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ এর দাবী করেন।
২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ২০১৯ সালে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ মন্দির প্রতিমা ভাংচুর, হিন্দু বাড়ী ঘরে অগ্নি সংযোগ, লুঠ-পাট, খুন, নারী অপহন, দেশ ত্যাগে বাধ্যকরন সহ নানা অত্যাচারের রিপোর্ট পেশ করেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সিনিয়র সহ সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, যুগ্ম মহাসচিব মনিশঙ্কর মন্ডল, আইন সম্পাদক সুব্রত হালদার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অমিও বাউল, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহিলা মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক সাগরিকা মন্ডল, উত্তরবঙ্গ সমন্বয়ক দুলাল কর্মকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট এর সভাপতি কিশোর কুমার বর্মন,সিনিয়র সহ-সভাপতি অরুপ রায়, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজেটের সভাপতি সাজেন কৃষ্ণ বল, দপ্তর সম্পাদক তপু কুন্ডু, ডাঃ মনোরঞ্জন হালদার প্রমূখ।
লিখিত রিপর্টে উল্লেখ করেন ২০১৯ সালের জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৩৬৫ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সরকার দলীয় নেতা কর্মী সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকদের দ্বারা এবং প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে হামলা লুঠপাট সহ নানা ঘটনা ঘটেছে।
২০১৯ সালের জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারে প্রকাশিত এবং বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের জেলা, থানা নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ৬৮৩টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩১,৫০৫ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং ৯,৫০৭.২২ একর ভূমি জবর দখল হয়েছে।
হত্যা করা হয়েছে ১০৮ জনকে, হত্যার হুমকী দেওয়া হয়েছে ১১১ জনকে, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ৮৮ জনকে, আহত করা হয়েছে ৪৮৪ জনকে, নিখোঁজ হয়েছে ২৬ জন, চাঁদা দিতে হয়েছে ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা, সকল ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায় ৪৩৩ কোটি ৫৬ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার সম্পদ।
মন্দির ও বাড়ীঘর লুঠপাট হয়েছে ২৭৭ টি, হামলা হয়েছে ৩৮৭টি, অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে ৯২ টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৭৯টি, ভূমি দখল হয়েছে ৯,৫০৭ একর ২২ শতাংশ, ঘরবাড়ী বেদখল করা হয়েছে ২০টি, মন্দিরের ভূমি ৩১টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ২৭টি, দখলের তৎপরতা হয়েছে ৬৬ একর ৫৮ শতাংশ, বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ ৪৩৪ টি পরিবার, উচ্ছেদ তৎপরতা ৬৯০টি পরিবার, উচ্ছেদের হুমকী ১৬০টি পরিবার, দেশ ত্যাগের হুমকী ৬৪১টি পরিবার, দেশত্যাগে বাধ্যকরন ৩৭৯ টি পরিবারকে, নিরাপত্তাহীনতা ২২৬১ টি পরিবার, মন্দিরে হামলা, ভাংচুর অগ্নিসংযোগ ৪৪৯টি, সঙ্গবদ্ধ হামলা ১২৫টি, প্রতিমা ভাংচুর, ২৪৬টি, প্রতিমা চুরি ৩১টি, অপহরণ ৭৬ জনকে, অপহরনের চেষ্টা ৭ জনকে, ধর্ষন ৪২ জনকে, ধর্ষনের চেষ্টা ৩৪ টি, ধর্ষনের পর হত্যা ৬টি, গণধর্ষন ১৮টি, জোড়পূর্বক ধর্মান্তর ও ধর্মান্তর করনের চেষ্টা ১৪৮জনকে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ৯৯টি, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, বরখাস্ত, আসামী ১০৯ জন, অবরুদ্ধ পরিবার ১০৫ জন, মন্দির অপবিত্রকরন ৫টি, মিথ্যা রাজাকার বানানো হিন্দু মুক্তিযোদ্ধা ৩৬ জনকে, পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় নিষিদ্ধ গোমাংস খাইয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ৫টি ঘটনায় ২২ জনকে।
পরিসখ্যান বলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত হিন্দু নির্যাতন বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় সর্বক্ষেত্রেই হিন্দু নির্যাতন বেড়েছে। গত বছর হত্যা হয়েছিল ৮৮জন এবার বেড়ে হয়েছে ১০৮ জন। গত বছর আহত হয়েছে ৩৪৭ এ বছর বেড়ে হয়েছে ৪৮৪ জন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গত বছর হামলা হয়েছিল ৩৫টি এবছর বেড়ে হয়েছে ৭৯টি। গতবছর বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ হয়েছিল ২১৭টি পরিবার এবছর বেড়ে হয়েছে ৪৩৪ টি পরিবার। গত বছর দেশ ত্যাগের হুমকী ছিল ২২৩ টি পরিবার এ বছর বেড়ে গিয়ে ৬৪১টি পরিবার এবং দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে ৩৭৮টি পরিবার।গতবছর নিরাপত্তাহীনতায় ছিল ১৫১০ পরিবার এবছর বেড়ে হয়েছে ২২৬১টি পরিবার। গত বছর মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছিল ১৩১টি এবছর বেড়ে হয়েছে ১৫৩টি। বাড়ীতে হামলা ভাংচুর অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছিলো ১০৮টি এবছর বেড়ে গিয়ে হয়েছে ৪৪৮টি। গত বছর ভূমি দখল ছিল ২৭৩৪.৮১ একর এ বছর বেড়ে গিয়ে হয়েছে ৯,৫০৭.২২ একর। এবছর নুতন করে ৩৬ জন হিন্দু মুক্তিযোদ্ধার গায়ে রাজকার তকমা যুক্ত হয়েছে। যদিও সরকার দুঃখ প্রকাশ করেছে তথাপি দুষ্টচক্র এই রিপোর্ট নিয়ে চিরকাল মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করবে, এখনই সন্দেহের চোখে দেখছে।
২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ব্যাপকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন হয়েছে। সেই নির্যাতনের বিষয় নিয়ে তৎকালীন ক্ষমতাশীন সরকার কোন বিচার করে নাই। বর্তমান আওয়ামী সরকার সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনা বিশ্বব্যাপী প্রচার করে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা লাভ করেছে।
হিন্দু সমাজ আশা করেছিলো বর্তমান সরকার ২০০১ সালের ঘটনা সহ সকল হিন্দু নির্যাতনের বিচার করবে; অপরাধীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু বর্তমান সরকার ১১ বছর দেশ পরিচালনা করলেও ২০০১ সালের ঘটনা সহ কোন অপরাধের বিচার করে নাই, ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য একজনেরও শাস্তি হয় নাই। তাই হিন্দু সম্প্রদায় আজ হতাশ।
এই বিচারহীনতার কারনেই অপরাধীরা বার বার হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই নিরবে আতঙ্কিত হিন্দু সম্প্রদায় দেশ ত্যাগ করছে। পরিসংখ্যান বলে দেয় এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এদেশ হিন্দু শুন্য হবে। অথচ সরকার এসব নিরসনে কোন কার্যকরী ভূমিকা রাখে নাই। সরকার মঠ মন্দির প্রতিমা ভাংচুর ও বাড়ীঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগকারীদেরকে চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে অপরাধীরা অপরাধ করতে আরও উৎসাহিত হচ্ছে।
সরকার দিন দিন মৌলবাদের প্রতি ঝুকছে। প্রশাসনেও হিন্দু বিদ্বেষ চরম আকারে। প্রতিনিয়ত হিন্দু ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করলেও আজ পর্যন্ত হিন্দু ধর্ম কটুক্তির অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা হয় নাই। উপরন্তু ফেসবুক হ্যাক করে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে শতাধিক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শত শত ঘরবাড়ী পুড়িয়ে, মঠ মন্দির ধ্বংস করে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে প্রতিনিয়ত হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে।সরকার সকল শ্রেনীর পাঠ্যপুস্তক ইসলামীকরণ করেছে। হিন্দু ছাত্র ছাত্রীদেরকে বাধ্যতমূলক ইসলাম ধর্ম পাঠ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। হিন্দু মহাজোট পাঠ্যপুস্তক অসাম্প্রদায়িক করার জোড় দাবী জানাচ্ছে। নির্বচন কমিশন বিভিন্ন সময় হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের দিনে নির্বাচনের দিন ধার্য করে।গত বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের আপত্তি সত্বেও দুর্গা পুজার দিনে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন করেছিলো। এবারও ৩০ জানুয়ারী ২০২০ সরস্বতী পুজার দিন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছে। হিন্দু মহাজোট সরস্বতী পুজার দিন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের জন্য জোড় দাবী জানিয়েছে।লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন যদিও সরকার সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে অতীতের তুলনায় যথেষ্ঠ তৎপর। তবুও দেশের বিভিন্ন স্থানে যে হারে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ চলছে, তাতে হিন্দু সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন না হয়ে পারে না।
সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় কোন কার্যকর ভূমিকা রাখে নাই। যেহেতু সরকারী দল ও বিরোধী দল এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জাতীয় সংসদে কোন কার্যকর ভূমিকা রাখেন নাই, সেকারনে এদেশের সংখ্যলঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য এবং এদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জাতীয় সংসদে ৫০ টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা দাবী করেন।হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্রের স্বার্থে জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে, হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা ও নির্যাতন নিরোধ কল্পে জাতীয় সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পূণঃ প্রতিষ্ঠা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং হিন্দু সম্প্রদায় থেকে একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ এর দাবী করেন।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷