সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ফেলে যাওয়া ১৫ বিঘা জমি ফিরে পেতে আদালতে অরুন সরদার
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ফেলে যাওয়া ১৫ বিঘা জমি ফিরে পেতে আদালতে অরুন সরদার
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরাঃ- এক হিন্দু পরিবারের ১৫ বিঘা সম্পত্তি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল সরদার ও তার ভাই সামছুর সরদারের বিরুদ্ধে। ওই জমি ফিরে পেতে কালিগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে মামলা করেছেন অরুন সরদার।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হোসেন জাকির বলেন, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন বাংলাদেশের অনেক পরিবার। তাদের মধ্যে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানাধীন ফতেপুর গ্রামের সতীশ চন্দ্র সরদারের ছেলে অরুণ চন্দ্র সরদার স্বপরিবারে অন্যত্র চলে যান। এ সময় তিনি ও তার মা লীলাবতী সরদার ফতেপুর মৌজার ১৬ বিঘা জমি কাউকে লিখে না দিয়েই ফেলে রেখে যান। কিন্তু ১৯৬৯ সালে নীলকণ্ঠপুর গ্রামের বদরউদ্দিন সরদার কোর্ট সোলে মূলে দাবি করেন। ২২ শতক জমি রাস্তা ও ১১ শতক জমি খাস হওয়ার পর ১৯৭৮ সালে ১৫ বিঘা জমি অরুন সরদার ও লীলাবতী সরদারের অনুপস্থিতিতে বদরউদ্দিন সরদার ও তার দু’ ছেলে নুরু সরদার ও সামছুদ্দিন সরদারের নামে আপোষ সোলেমূলে ডিক্রী করে নেন। এরপর থেকে অরুন সরদারকে মারফৎ খাজনা দেন ওই দু’ ভাই। এরমধ্যে ৫ শতক জমি খাস হওয়ায় তা দখলে রাখতে ওই জমিতে পাকা দোতলা ভবন তৈরি করে তা জনতা ব্যাংক বাঁশতলা বাজার শাখার নামে ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সামছুরের দু’ ছেলে কামাল হোসেন ও অহিদুজ্জামান ডাবলু। এ জন্য তারা জনতা ব্যাংকের সাথে গত বছরের ৬ অক্টোবর একটি চুক্তিপত্রও করেছেন। বিরোধপূর্ণ ও বিচারাধীন জমিতে নির্মিত ভবনে এ ধরণের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ভাড়াটিয়া হিসেমবে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে সামছুর সরদার ও নূরুল সরদার ওই জমির মধ্যে বাঁশতলা বাজার সংলগ্ন প্রায় ২০ শতক জমি মধু বিশ্বাস, সামাদ কারিকর, ধীরেন্দ্রনাথ, দাউদ গাজী ও তপন দত্তসহ ২১ জনের কাছে হস্তান্তর করে মোটা অংকের টাকা লুটে নিয়েছেন। সরকারি খাস জমিতে অবৈধ ভবন নির্মানের বিষয়ে ভূমি সচীব, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও তারা প্রভাব খাটিয়ে সকল জমি জবর দখল ও খাস জমিতে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিষ্ণুপুর গ্রামের সমীর মণ্ডল জানান, জমি ফিরে পেতে তার ভগ্নিপতি অরুন সরদার গত বছরের ২ নভেম্বর কালিগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে মামলা (দেঃ ১৩১/২০) দায়ের করেছেন। এরপর থেকে তিনিও নানা হুমকিতে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা নুরু সরদার বলেন, ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের নির্দেশে রেজিষ্ট্রি বন্ধ থাকায় তার বাবার নামে কোর্ট সোলে করা হয়। পরবর্তীতে তার ও ভাই সামছুরের নামে ১৫ বিঘা জমি লিখে দেন তার বাবা বদরউদ্দিন সরদার। তবে তাদের জমির মধ্যে ৫ শতক জমি খাস রয়েছে সেটা অস্বীকার না করেই বলেন, ওই জমিতে তারা পাকা ভবন করছেন সেটা ঠিক নয়। কারণ ১৫ বিঘার মধ্যে ওই জমিই খাস সেটা বলার কোন সূযোগ নেই। তাছাড়া জাকির হোসেনের অভিযোগ অনুযায়ি বিষয়টি তদন্ত করে খাস জমিতে দ্বিতল ভবন নির্মাণের ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় তারা নির্মাণ কাজ অব্যহত রেখেছেন।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷