সোনারগাঁয়ে ১৪৫ ধারা অমান্য করে রিপন সাহার বসতঘর দখল ও ভাংচুরের প্রতিবাদে হিন্দু ফোরামের সংবাদ সম্মেলন।
সনাতন নিউজ২৪. ঢাকা বাংলাদেশ
১৫ জানুয়ারী শুক্রবার সকাল ১০.৩০টায় রাজধানীর বাংলাদেশ ক্রাইমরিপোর্টার্স এসোসিয়েশন হলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের নগর জোয়ারে ১৪৫ ধারা অমান্য করে নাজিম উদ্দিন গং কর্তৃক রিপন সাহার বসতঘর দখল,ভাংচুর ও জোর পূর্বক দেয়াল নির্মানের ঘটনাসহ থানায় মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক আইনামলে এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কন্দ্রীয় কমিটি ও ক্ষতিগ্রস্থ রিপন সাহা,লিটন সাহা ও তাদের পরিবারের উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল মানিক চন্দ্র সরকার, উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার শিল্পী ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন কর , বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ চন্দ্র দাস,আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ বাসুদেব গুহ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাঞ্চন মজুমদার,হিন্দু স্টুডেন্ট ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অজয় কুমার বিশ্বাস,সহ বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরামের জেলা,কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ক্ষতিগ্রস্থ রিপন সাহা,লিটন সাহার পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
উক্ত অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের রিপন সাহা জানান আমি রিপন সাহা (৩৫), পিতা- নিতাই চন্দ্র সাহা, সাং-নগর জোয়ার, থানা-সোনারগাঁ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ
বিবাদী ১। নাজিম উদ্দিন সরকার (৫৫), পিতা-আয়াত আলী সরকার, ২। ওবায়েদ উল্লা (৩৫), পিতা-নাজিম উদ্দিন সরকার উভয় সাং-মোবারক পুর, থানা-সোনারগাঁ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ। ৩। ওলিউল্লা (৩২), ৪। মাসুম (৩০) সবর্ পিতা -আঃ বারেক, ৫। রাবেয়া বেগম (৪৮), স্বামী-নাজিম উদ্দিন সরকার, ৬। মোহাম্মদদোল্লা সরকার (২৭), পিতা- নাজিম উদ্দিন সরকার, ৭। আঃ ওহাব (৫৫), পিতা- মৃত হাসেম মিয়া, ৮। মোসাঃ আয়েশা বেগম (৫০), স্বামী- আঃ ওহাব, সর্বসাং- নগর জোয়ার, থানা-সোনারগাঁ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, আমি একজন ব্যবসায়ী। বিবাদীগন আমার পার্শ্ববর্তী বাড়ীর বাসিন্দা। বিবাদীগন উচ্ছৃঙ্খল, পরধনলোভী ও দুষ্ট প্রকৃতির লোক। নিম্ন তফসীলভুক্ত সম্পত্তি আমার পিতা নিতাই চন্দ্র সাহা পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হইয়া ভোগ দখল করিয়া আসিতেছি। পূর্ব শত্রুতার জেরে বিবাদীগণ বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে আমাদের বসতঘর বাড়ীর জায়গা দখল করার জন্য আমাদের সহিত কারনে অকারনে ঝগড়া বিবাদ করিয়া আমাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি,ক্ষয়ক্ষতি ও দেশ ত্যাগের হুমকি প্রদান করিয়া থাকে। এরই ধারবাহিকতায় রক্ষা পেতে প্রথমে নাঃ,গঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-১৯৯/১৭ ইং, তারপর ১৫/০২/২০১৮ ইং তারিখ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী “ঘ” অঞ্চল এর আদালত নারায়ণগঞ্জ সি.আর মামলা নং-২৯/২০১৮ ইং, সি.আর মামলা নং-৮৯৬/১৮ ইং, সহ সোনারগাঁও থানার মামলা নং-৩৭, তারিখ- ১৪/০১/২০১৮ ইং, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪২৭/৫০৬ পেনাল কোড দায়ের করি। পরে উপর নামীয় কিছু বিবাদীগন গত ২৯/১০/২০২০ ইং,তারিখে আমাকে ও আমার ভাইকে মারধর করলে আমার ভাই সোনারগাঁও থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি, সর্বশেষ গত ১৯/১২/২০২০ ইং তারিখ সকাল অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় উক্ত বিবাদীগণ আমাদের বসত বাড়ীর সামনে পূর্বের জের ধরিয়া পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বে-আইনী জনতাবদ্ধ যোগসাজসে তাহাদের হাতে থাকা কাঠের ও বাঁশের লাঠিসোঠা সহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আমাদের বসত বাড়ি বেআইনীভাবে দখল করতে আসলে উপায়ন্ত না পাইয়া গত ২১/১২/২০২০ ইং তারিখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে ১৪৫ধারা মামলা করি এবং অদালতের আদেশে শান্তিশৃংখলা রক্ষার দায়িত্ত্ব সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)র উপর থকার পরেও তার দায়িত্ব অবহেলা ও প্রশয়ে বিবাদীগন আদালতের আদেশ অমান্য করে গত ২৬/১২/২০২০ ইং তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় আমাদের বসত বাড়ী দখলের উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক পাকা দেওয়াল নির্মান করে এবং উপরোক্ত বিবাদীগন সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন হাতে লোহার রড, সাবল ও লাঠিসোঠা নিয়ে বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হইয়া অনধীকারে আমাদের নিম্ন তফসীলভুক্ত সম্পত্তিতে প্রবেশ করিয়া আমাদের উক্ত সম্পত্তিতে থাকা একটি দোচালা টিনের ঘর ভাংচুর করিয়া পুরো ঘরটি নিয়ে যায় এবং উক্ত জায়গায় টিনের ভেরা দিয়া জায়গাটি দখল করে নেয় এবং আমার অনুমান ঘর বাবদ ১,০০,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা ক্ষতি সাধন করিয়া জোর পূর্বক অরো ২০০০০০/-(দুই লক্ষ) টাকার মালামাল লুটতরাজ করিয়া নিয়ে যায় তাতে আমি ও আমার স্ত্রী শিল্পি রানী সাহা (৩০), বৌদি শোভা রানী সাহা (৫০) ও মাতা ভালবাসা রানী সাহা (৭০), বাধা দিলে সকল বিবাদীগন তাহাদেরকে অশ্লীশ ভাষা ও মালোয়ান বলে গালি গালাজ করে এবং প্রকাশ্যে বিভিন্ন ভয়ভীতিসহ প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করিয়া চলিয়া যায়। পরবর্তীতে গত ২৮/১২/২০২০ইং তারিখ বিকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার সময় উপরোক্ত বিবাদীগণ পুনরায় তাদের দ্বারা পূর্বে নির্মিত পাকা দেওয়ালটি বাড়িয়ে পাকা ঘর উত্তোলন করতে শুরু করলে আমরা পুলিশ কে খবর দেই এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে তাহাদেও নিরবতায় তাহাদের সামনেই আমাকে এবং আমার মা ভালবাসা রানী সাহা (৭০) কে অতর্কিত হামলা করিয়া এলোপাথারী কিল ঘুষি লাথি মারিয়া ও লাঠি দিয়া পিটাইয়া বুকে, হাতে পায়ে, নাকে, চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে এবং উপরোক্ত ১নং বিবাদী আমাদের ভয়ভীতি দেখাইয়া প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে বলে যে, মামলা করিয়া কি লাভ হইলো পারলে আরো মামলা মোকদ্দমা কর, আমাদের কিছুই করতে পারবি না আর উক্ত সম্পত্তি নিয়া বেশী বাড়াবাড়ী করলে তোকে ও তোর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কে খুন করে লাশ গুম করে ফেলব কেউ জানতেও পারবে না। পরে আমরা আত্মচিৎকার করিলে তাহারা তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল হতে প্রস্থান করে। পরবর্তীতে আমরা যাতে বাড়ী থেকে বাহির হতে না পাড়ি সেজন্য অমাদের চলাচলের পথ বেড়া দিয়ে বদ্ধ করে দেয়। উপরোক্ত ঘটনায় ৩০/১২/২০২০ইং তারিখে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)র বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও আমল যোগ্য অপরাধে তিনি কোন ব্যবস্থা না নিয়ে নিরব থাকে। এর পূর্বে গত ২৯/১০/২০২০ইং তারিখে আরো একটি অভিযোগের মামলা নিয়নি সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। প্রতিকার পেতে নারয়নগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কে উপরোক্ত বিষয়ে গত ৩০/১২/২০২০ইং তারিখে লিখিত অভিযোগ দেই এবং তার সাথে দেখা করে উপরোক্ত বিষয়ে তাকে বিস্তারিত জানাই, জানানোর পরেও এযাবৎ তার কাছেও কোন প্রতিকার পাইনি। উপরোক্ত বিষয়ে আশু ব্যবস্থা গ্রহন না করলে আমাদের গ্রাম ত্যাগ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার বিবাদীদের ভয়ে নানাবিধ বিপদের আশংকায় চরম আতংক ও নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছি। বিবাদীগণ অত্যন্ত ধুরন্দর ও দুষ্ট প্রকৃতির হওয়ায় তাহারা আমাদেরকে কখন যে কি করিয়া ফেলে তাহা বলা যায় না।
স্বাধীন বাংলা বেতার শিল্পী ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল ,সেক্রেটারী জেনারেল মানিক চন্দ্র সরকার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা বলেন অভিলম্বে ক্ষতিগ্রস্থ রিপন সাহা,লিটন সাহার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপরোক্ত বিষয়টি সমাধান কল্পে সংস্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করতে হবে এবং এ বিষয়এ বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরামের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আমরা উদাথ্য আহব্বান জানাচ্ছি, এবং পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ো প্রদেশের করক জেলায় ঐতিহাসিক কৃষ্ণদার হিন্দু মন্দিরে হামলার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপশি, সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন,দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনের চট্রগ্রামের রহমতগঞ্জে অবস্থিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক জে,এম সেন ভবন ভাংচুর ও হামলার ঘটনায় বিচারের দাবী জানাই। উপরোক্ত বিষয় সমূহ অভিলম্বে সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা না নিলে ,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম ও অন্যান্য সমমনা সংগঠনগুলিকে নিয়ে সমস্যা সমাধানে বৃহত্তর অন্দোলন গড়ে তুলা হবে তারা হুসিয়ারী দেন।
শেরার করুণ...
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷