এবার খোদ ইসলামিক বিপ্লবের দেশ ইরানেই সংখ্যালঘু হয়ে গেলো মুসলিমরা। এই খবর অনেককেই চমকে দেবে, বিশেষ করে ভারতের, বাংলাদেশের এবং পাকিস্তানের মৌলবাদী মুসলিম ধর্ম প্রচারকরা শিউরে উঠবেন, বিশ্বাস করতে চাইবেন না, বিশ্বাস করলেও এই সাংঘাতিক তথ্য নস্যাৎ করবেন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে।
উলেখ্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন ফ্রান্স, জার্মানি ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ সুইডেনে বেড়ে চলেছে মুসলিম জনসংখ্যা, যদিও ওই সব দেশ এখন মধ্যপ্রাচ্য থেকে গিয়ে ঘাঁটি গাঁড়ানো মুসলিমদের আগের মতো স্বাগত জানাচ্ছে না এবং অনেক ক্ষেত্রে অবাধ বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করছে ।
বিশ্বাস না করে উপায় নেই, কারণ ইরানের নিজস্ব সরকারি সংস্থা, স্ট্যাটাসটিক্যাল সেন্টার অফ ইরান এর সমীক্ষার রিপোর্টই বলে দিচ্ছে মুসলিম দুনিয়ার জন্য দুঃখবহ এই সংবাদ। এই রিপোর্ট সামনে আসতেই, ইরান তো বটেই, হই চৈ পড়ে গেছে গোটা বিশ্বে, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলিতে ।

  • কি বলছে এই সার্ভে রিপোর্ট?

অত্যন্ত গোপনে করা এই সার্ভে চালানো হয় ইরানের প্রত্যেকটি বাড়িতে । প্রত্যেক পরিবার কে জানানো হয় সরকারি ভাবে যে তাঁদের পরিচয় ও তাঁদের বক্তব্য গোপন রাখা হবে যে কোনো মূল্যে ।

এই আশ্বাস পাওয়ার পরেই ইরানের জনগণ সাহস করে বেরিয়ে এসে তাঁদের ব্যক্তিগত ধারণা, বিশ্বাস, রাজনৈতিক ও ধার্মিক মতাদর্শ তুলে ধরেন এস সি আই এর কাছে।

মুসলমান অত্যাচারের পরেও প্রাক-মুসলিম পারসী ধর্মালম্বীরা নিজেদের ধর্ম অক্ষুন্ন রেখেছে । মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশ, পারসীরা হিন্দু দেবতা সূর্য্য দেবের উপাসক ।

এই গোপন সার্ভে রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছেন যে এই মুহূর্তে ইরানের শিয়া সম্প্রদায় এর মানুষ আছেন 33%।
সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন 6% মানুষ ।
আহমেদিয়া মুসলিম ও অন্যান্য মুসলিম জনগোষ্ঠী হচ্ছে আনুমানিক 1 %।
অর্থাৎ, শিয়া, সুন্নি, ও অন্য মুসলিম জন গোষ্ঠী মিলিয়ে এই মুহূর্তে ইরানের মুসলিম জন সংখ্যা 40%।

এছাড়া ঈশ্বর মানেননা বা নাস্তিক এর সংখ্যাও নেহাত মন্দ নয়, তার সংখ্যা 39%।
আদি পারসি ধর্মে বিশ্বাস রেখে আগুন কে পুজো করার সংখ্যা ও চমকে দেওয়ার মতো, 9% ।
খ্রীষ্টান ও ইহুদি জন সংখ্যা পর্যাক্রমে 8% ও 3% ।
এক শতাংশ মানুষ অবশ্য সেই ভাবে কোনো উত্তর দিতে পারেননি ।

এই পরিসংখ্যান তাক লাগিয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বে ও মুসলিম দুনিয়াতে।

  • ইরানের অর্ধেকের বেশি মানুষ নামাজই পড়ে না :

গোপন সার্ভে রিপোর্ট আরো বলছে, 60% ইরানের মানুষ রোজকারের নামাজ তো পড়েই না বরং রমজান মাসে রমজান পালন করেন মাত্র 35% ইরানের মানুষ।

অত্যন্ত বিশ্বয়কর হচ্ছে আরেকটি তথ্য, যেটা বলছে ইরানের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইসলাম ধর্ম ত্যাগের প্রবণতা শতাংশ 38.5 % এর মতো, যা নিঃস্বন্দেহে বহু মানুষকে অবাক করেছে ।
আরেকটি তথ্য সত্যি উল্লেখ করার মতো, নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে 72% ইরানের মানুষ জানিয়েছেন তারা মহিলাদের বুরখা ও হিজাব পরার বিপক্ষে ।

  • কিন্তু কেন এমন হলো?:

এর উত্তর লুকিয়ে আছে ইরানের মহিলাদের খোলাখুলি ও নির্ভীক উত্তরে ।
তারা জানান, বর্তমান তথা তরুণ প্রজন্ম এর তরুণ তরুণীরা ইসলামের রক্তাক্ত ইতিহাস ও সংস্কৃতি আর বহন করতে চাইছেন না। অন্য ধর্মের অবমাননা, অমুসলিমদের প্রতি অন্যায়, অবিচার ও অত্যাচারের যে রীতি ও নীতি ইসলামে আছে, তা বহন করতে করতে ক্লান্ত তাঁরা ।
ইসলামিক সংস্কৃতি বহন করার ফলে মুসলিমদের গোটা বিশ্বের দরবারে কাছে মাথা হেট হয়ে গেছে বলেও মনে করে আজকের ইরানের তরুণ প্রজন্ম ।
এছাড়া তাঁদের কাছে রয়েছে অন্য অনেক বিকল্পও । ফলে ইসলাম এর প্রতি তৈরী হয়েছেন অনীহা ও হিড়িক পরে গেছে ইসলাম ত্যাগ করার ।
এই সমীক্ষার অন্যতম প্রাপ্তি হচ্ছে ‘পারসী জাতীয়তাবাদের উত্থান’। এর ফলেই 9% ইরানের মানুষ ‘আগুন ‘ তথা সূর্য শক্তির পূজারী । পারসীরা ছিল ইসলামের আগে ইরানের আদি ধৰ্ম, ইসলামিক অত্যাচারের স্বীকার হয়ে পার্সিরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং অধিকাংশ পারসী ভারতে পালিয়ে এসে জীবন বাঁচায় । পারসীদের এই প্রবণতা আদি আর্য সভ্যতা র কথা ও নিদর্শন মনে করিয়ে দেয়।


শেরার করুণ...