জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সমান অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য ‘জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন’ গঠনের খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করেছে একাত্তরের ঘাতক দালার নির্মূল কমিটি।
ঢাকা: ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সমান অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য ‘জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন’ গঠনের খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করেছে একাত্তরের ঘাতক দালার নির্মূল কমিটি।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালার নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক খসড়াটি পাঠ করেন।
তিনি বলেন, এই কমিশনকে হতে হবে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ফলপ্রসূ সংস্থা। যা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত বৈষম্য এবং অপরাধের ক্ষেত্রে সফল এবং কার্যকরপন্থা গ্রহণ করতে পারে। সংবিধানে ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-লিঙ্গ নির্বিশেষে সব নাগরিকের যেসব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সনদসহ অন্য আর্ন্তজাতিক সনদে যেসব অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়িত করার জন্য উপযুক্ত প্রক্রিয়া যেন এই কমিশন গ্রহন করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
‘সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা, তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, ধ্বংস করা বন্ধের জন্য এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষমতা কমিশনের থাকা প্রয়োজন। যার ভেতরে থাকতে পারে এজাহার দায়ের করার ক্ষমতা, তদন্ত করার ক্ষমতা, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করার ক্ষমতা ইত্যাদি। বিভিন্ন দপ্তর এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গোপনীয় নয় এমন দলিল তলব করা, তথ্য উপাত্ত তলব করা এবং সাক্ষীকে তলব করার ক্ষমতা এই কমিশনকে দিতে হবে। যা ভারতীয় কমিশনের রয়েছে। ভুক্তভোগীরা হাইকোর্টে রিট মামলা করলে কিংবা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে উপযুক্ত ক্ষেত্রে রিটকারী বা আবেদনকারীদের আইনি সহায়তা প্রদানের ক্ষমতা কমিশনের থাকতে হবে।’
প্রস্তাব অনুযায়ী, কমিশনের প্রধান, কার্যনির্বাহী এবং সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা চেয়ারম্যান নামে পরিচিত হবেন। যিনি হবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতির সমমর্যাদার। একজন উপদেষ্টা থাকবেন। দু’জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ৫ জন কমিশনার থাকবেন। ৫ জন পরিচালক থাকবেন যারা কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন। একজন সচিব থাকবেন যিনি হয় জেলা জজ বা সমপর্যায়ের বিচারিক কর্মকর্তা বা অতীতে উপসচিব বা ওইসব পদে অতীতে কর্মরত ছিলেন। একটি গবেষণা বিভাগ থাকবে। গবেষকের সংখ্যা নির্ধারণ করবে কমিশন। এছাড়াও ১০টি ক্যাটাগরিতে জনবল নিয়োগ করতে হবে। কমিশনের সদর দপ্তর হবে ঢাকায়। ভুক্তভোগীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য পর্যায়ক্রমে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে কমিশনের দপ্তর স্থাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- একাত্তরের ঘাতক দালার নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সদস্য অ্যাডভোকেট আজহারুল ভূঁইয়া, মনোরঞ্জন ঘোশাল, ডা. উত্তম বড়ুয়া, তুরিন আফরোজ প্রমুখ।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷