Breaking News

[করোনা রোধে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ হতে পারে : প্রধানমন্ত্রী


 দেশে ফের ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে মহামারি করোনা ভাইরাস। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য বিবেচনা করে করোনার প্রথমবারের মতো সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১ এপ্রিল একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে এ কথা জানান তিনি। এ সময় জনগণের সহায়তা দরকার বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা প্রায় নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছিলাম, কিন্ত গোটা বিশ্বেই এর প্রভাব বেড়েই চলেছে। দেশেও করোনার প্রাদুর্ভাব হঠাৎ বেড়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, টিকা নেওয়ার পর মানুষের উদাসীনতা বেড়ে গেছে। বিয়ে-পর্যটনসহ নানা কারণে যারা বেশি বেশি ঘুরে বেড়িয়েছেন তারাই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বেশি। মাস্ক পরাসহ, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার কোনো বিকল্প নেই।

করোনা সংক্রমণ রোধে সীমিত মানুষ নিয়ে কাজ করার অভ্যাস করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। কয়েক দফা বাড়িয়ে সাধারণ ছুটি ছিল ৩১ মে পর্যন্ত।

এদিকে করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

গত সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।

১৮ দফা নির্দেশনাগুলো হলো:

১. সকল ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সকল ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে/জন্মদিনসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।

২. মসজিদসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৩. পর্যটন/বিনোদনকেন্দ্র সিনেমা হল/থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৪. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।

৫. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।

৬. বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে, ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহ মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৯. শপিংমলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১০. সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

১১. অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

১২.  প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাক্ক পরিধানসহ সকল ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৩. করোনায় আক্রান্ত/করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

১৪. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস! প্রতিষ্ঠান শিল্পকারখানাসমূহ ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। অন্তঃসত্ত্বা/অসুস্থ/বয়স পঞ্চান্নোর্ধ্ব কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৫. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬. সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যে কোন ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

১৭. হোটেল-রেস্তোরাঁসমূহে ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক মানুষের প্রবেশ বারিত করতে হবে;

১৮. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷