[ সাতক্ষীরায় শিক্ষক কতৃক অপ্রাপ্ত বয়স্ক হিন্দু মেয়েকে ধর্মান্তর করে বিয়ে
সাতক্ষীরায় এক কিশোরীকে (১৬) ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার অভিযোগে শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না তা জানতে চেয়ে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
শনিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও ওই কিশোরীকে উদ্ধারের দাবি জানিয়ে শনিবার বিকেল ৪টায় নুরনগর বাজারে মানববন্ধন করছে সুরক্ষা নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা (সুনাম) কমিটির শ্যামনগর শাখা।
মেয়ের বাবা জানান, ২০১৯ সালে তার মেয়ে নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদ (৪৮) তাকে বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক খাতার কাজে সহযোগিতা করতে তাদের বাড়িতে আসতেন। ওই বছরের কার্টুনিয়া রাজবাড়ি ডিগ্রি কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হয় তার মেয়ে। বর্তমানে তার নাম নাফিসা খাতুন। জন্ম সনদ অনুযায়ী মেয়ের জন্ম ২০০৪ সালের ১ ডিসেম্বর
তিনি আরও জানান, গত ২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কলেজে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে মেয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। দুপুর ২টার দিকে বাড়ি না ফেরায় মেয়ের খোঁজে নেমে পড়েন তিনি ও তার স্বজনরা। একপর্যায়ে মেয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সম্ভাব্য সব জায়গায় তাকে খুঁজে না পেয়ে পরদিন তিনি শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (১৮২) করেন।
মেয়ের বাবা সন্যাসী অধিকারী জানান, গত ৭ এপ্রিল তার মেয়ে ও প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদ খুলনার এক নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে বসে ধর্মান্তরিত হওয়া ও বিয়ে সংক্রান্ত এক নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করছেন ফেসবুকে এমন ছবি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা তাকে জানান। একপর্যায়ে ওই রাতেই তিনি শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে থানায় মেয়েকে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে একটি এজাহার দাখিল করেন।
ভুক্তভোগী মেয়েটির পিতা সন্যাসী অধিকারী বলেন, আমি সরকারের কাছে ন্যায় বিচারের আসায় মামলা করেছি।
আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক পলাশ দেবনাথ, আশরাফ হোসেন ও লিটন সরদার জানান, এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন প্রধান শিক্ষকের ভাই নুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য বখতিয়ার আহমেদ। শামীম আহমেদ কয়েক বছর ধরে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে জনসাধারণের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বখতিয়ার আহম্মেদ বলেন, ‘শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেয়ার পর প্রয়োজনে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে শামীম আহমেদের নামে শুক্রবার রাতে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক দীপ্তেশ রায়কে আসামি গ্রেফতার ও ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷