ব্রাহ্মণবাড়িয়া হিন্দু বাড়িতে হামলা, মারধর, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় একজন মহিলা সহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে
সনাতন নিউজ২৪.
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে একটি সংখ্যালঘু হিন্দু বাড়িতে হামলা, মারধর, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে! একজন মহিলা সহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে!
বরাবর
অফিসার ইনচার্জ,
নাসিরনগর থানা, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
বিষয়ঃ এজাহার ।
ঘটনাস্থলঃ পূর্বভাগ গ্রামস্থ বাদীর বসত বাড়ী ।
ঘটনার তারিখ ও সময়ঃ ০৯/০৫/২০২০ ইং তারিখ সকাল ০৮:০০ঘটিকায়।
বাদীঃ রনজিত দেবনাথ, পিতা-মৃত সুরেন্দ্র দেবনাথ, সাং- পূর্বভাগ নাথপাড়া, থানা- নাসিরনগর,
জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
বিবাদীঃ ১। রুবেল মিয়া (৩০), পিতা- জামাল মিয়া
২। জুনাইদ মিয়া (৩২) ,পিতা- বাবু মিয়া
৩। জসিম মিয়া ( ২৫), পিতা- লাবু মিয়া
৪। তানভীর মিয়া (২৪), পিতা- কামাল মিয়া
৫। ছাদেক মিয়া (৩৫), পিতা- লাউছ মিয়া
৬। রাজ্জাক মিযা (৩২), পিতা- ঐ
৭। জুলেনা বেগম (২৮), পিতা- কিতাব আলী
৮। শাহেরা বেগম (৩২ ), পিতা- বানু মিয়া
সর্বসাং- পূর্বভাগ ২ নং ওয়ার্ড, থানা- নাসিরনগর, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া গং।
সাক্ষীঃ ১। জখমী প্রনতি দেবনাথ, স্বামী- সুরেশ দেবনাথ
২। জখমী আরতী দেবনাথ, স্বামী- সুরেন্দ্র দেবনাথ
৩। জখমী গোপাল দেবনাথ, পিতা- হরি দেবনাথ
৪। জখমী দীপক দেবনাথ, পিতা- সুরেশ দেবনাথ
৫। জখমী রঞ্জিত দেবনাথ, পিতা- সুরেন্দ্র দেবনাথ
৬। জখমী সুকুমার দেবনাথ, পিতামৃত- চন্দ্রমনি দেবনাথ
৭। জখমী সমীর দেবনাথ, পিতা- সুরেন্দ্র দেবনাথ
৮। জলিল মিয়া, পিতা- মনু মিয়া
৯। মোবারক মিযা, পিতা- শহিদ মিযা
সর্বসাং পূর্বভাগ, থানা- নাসিরনগর, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
জনাব
সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি নি¤œস্বাক্ষরকারী রনজিত দেবনাথ আপনার থানায় হাজির হইয়া অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, আমি একজন সাধারণ কৃষক। পক্ষান্তরে, বিবাদীগণ আমাদের গ্রামের খারাপ, দুস্কৃতিকারী ও অসৎ প্রকৃতির লোকজন। বিবাদীগণ আইন আদালতের তোয়াক্কা করে না। তারা আমাদেরকে নিরীহ পাইয়া আমাদের বাড়ীতে আসিয়া বাড়ীর উঠতি বয়সের মেয়েদের ও মহিলাদের অশ্লীল ভাষায় কথা বার্তা বলে।
কেহ প্রতিবাদ করিলে তাদেরকে ধরিয়া মারপিট করে এবং প্রাণে মারার ভয়ভীতি দেখায়। ঘটনার দিন আগের দিন বিকাল বেলায় বিবাদীগণ আমার আম গাছের আম ঢিলাঢিলি করিয়া আম পারিতে থাকিলে আমি প্রতিবাদ করায় বিবাদীগণ আমাকে মারপিট করার ভয়ভীতি দেখায়। আমি সহ কতক মুরুব্বী বিবাদীদের অভিভাবককে ঘটনার বিষয় জানাইলে বিবাদীগণ আমাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া বলে কে আমার বাবার নিকট বিচার দিয়েছে, তা বুঝিতে পারিবে।
ঘটনার দিন ০৯/০৫/২০২০ ইং তারিখ সকাল অনুমান ৮:০০ ঘটিকায় সকল বিবাদীগণ হাতে দা, লোহার রড, শক্ত লাঠি ইত্যাদি নিয়া আসিয়া আমাকে বাড়ীতে পাইয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করিতে থাকিলে ১ ও ২ নং সাক্ষী আগাইয়া আসিলে বিবাদীগণ ১ ও ২ নং সাক্ষীর চুলে ধরিয়া টানিয়া মাটিতে ফেলিয়া কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া পরনের কাপড় চোপড় বিবস্ত্র করে।
১নং বিবাদী প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ১নং সাক্ষীর মাথায় কোব মারিয়া মারাত্বক রক্তাক্ত জখম কর, ২ নং বিবাদী লোহার রড দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে ১নং সাক্ষীর মাথায় বারি মারিয়া মারাত্বক রক্তাক্ত জখম করে। ২নং বিবাদী পুনরায়: লোহার রড দিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ২নং সাক্ষীর মাথায় বারি মারিয়া মারাত্বক রক্তাক্ত জখম করে। ৩নং বিবাদী হত্যার উদ্দেশ্যে ৩ নং সাক্ষীর মাথা বরাবর লোহার রড় দিয়া বারি মারিলে বারিটি ৩নং সাক্ষীর ডান কাধে পরিয়া হাড়ভাঙ্গা জখম করে। ৩নং বিবাদী একই উদ্দেশ্যে ৩নং সাক্ষীর মাথা বরাবর বারি মারিলে বারিটি ৩ নং সাক্ষীর ডান হাতে মারাত্বক হাড়ভাঙ্গা জখম করে।
৪নং বিবাদী হত্যার উদ্দেশ্যে তাহার হাতে থাকা শক্ত লাঠি দিয়া ৪নং সাক্ষীর বুকে বারি মারিয়া বুকের হাড় ভাঙ্গিয়া মারাত্বক জখম করে।৫নং বিবাদী শক্ত লাঠি দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে ৫নং সাক্ষীর বুকে বারি মারিয়া হাড়ভাঙ্গা জখম করে। ৬নং বিবাদী লোহার রড দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে ৬নং সাক্ষীর মাথা বরাবর বারি মারিলে বারিটি হাত দিয়া ফিরাইলে ডান হাতের জয়েন্টে পরিয়া হাড়ভাঙ্গা জখম হয়। ৭ নং বিবাদী লোহার রড দিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭ নং সাক্ষীর মুখে ফার মারিলে সাক্ষীর মুখের উপরের মাড়ির দুইটি দাঁত ভাঙ্গিয়া মারাত্বক হাড়ভাঙ্গা জখম করে।
বিবাদীগণ জুমলাভাবে জখমীদের মারপিট করিয়া আমার বসত ঘরে ঢুকিয়া আসবাবপত্র ভাংচুর করিয়া আমার ভাই সমীরের রক্ষিত ৫০০ ভরি রূপা মূল্য অনুমান ৩,০০,০০০/- টাকা ও নগদ ৬০,০০০/- টাকা ৩ ও ৪নং বিবাদী নিয়া যায়। আমার ভাতিজা দীপকের বসত ঘরে ঢুকিয়া ১ ও ২নং বিবাদী ১০ ভরি ওজনের স্বর্ণাংলকার মূল্য অনুমান ৫,০০,০০০/- টাকা ও নগদ ১,৫০,০০০/- টাকা নিয়া যায়।
উল্লেখ্য, সমীর রূপার কাজ করে এবং দীপক স্বর্ণের কাজ করে। স্বর্ণাংলকার ও রূপা কাজ করার জন্য বাড়ীতে রক্ষিত রাখে। সকল বিবাদীগণ আমার ও ভাতিজা দীপকের বসত ঘর, আসবাবপত্র, চাল, বেড়ায় ভাংচুর করিয়া অনুমান ৫০,০০০/- টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করিয়া নিয়া যায়। বিবাদীগণ বীরদর্পে চলিয়া যায় সময় হুমকি দেয় যে, এই নিয়া বাড়াবাড়ি করিলে আমাদেরকে দেশ ছাড়া করিবে কিংবা বাড়ী ঘর আগুন দিয়া মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানি করিবে।
আমি আশপাশের লোকজনের সহায়তায় জখমীদের নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনিয়া চিকিৎসা করাই। ১নং সাক্ষী মারাত্বক জখমী অবস্থায় আছে। ১নং সাক্ষী সহ ২, ৭নং সাক্ষী মারাত্বক জখমী অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে রেফার করা হইয়াছে। ১,২ও ৭ নং সাক্ষীদের উন্নত চিকিৎসার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হইয়াছে। অত্র সংগে নাসিরনগর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসা সংযুক্ত করিলাম।
অতএব, মহোদয় আমার অভিযোগ খানা এজাহাররূপে গণ্য করিয়া বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনগতঃ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সবিনয় প্রার্থনা করছি।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের পক্ষ থেকে এই জঘন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷