মুসলিমদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করে দিলেন হিন্দু পরিবার চট্টোপাধ্যায়দের ছাদে
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে ভারতে মসজিদে পাশাপাশি বসে নামাজ পড়ায় বিধিনিষেধ। এছাড়া দেশটির অনেক মুসলিমদের বাড়িতে ঘেরা জায়গায় বসে নামাজ পড়ার জায়গা নেই। এমন মুহূর্তে মুসলিমদের নিজেদের ছাদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের এক হিন্দু পরিবার।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বর্ধমান জেলার কালনা এলাকার এক চট্টোপাধ্যায় পরিবার শুধু ঈদের দিন নয়, রমজান মাস জুড়েই তাদের ছাদে মুসলিমদের ‘পাঁচ ওয়াক্ত’-এর নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
কালনা পৌরসভার সাবেক প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগের কথায়, দেশ জুড়ে দুর্যোগের পরিস্থিতিতে এ ধরণের কাজ মানুষকে আলো দেখাবে।
কালনা শহরের ডাঙাপাড়ায় মুসলিমেরা জানান, অন্য বার এলাকার মসজিদেই নামাজ পড়েতেন। তবে এ বার করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে মসজিদে এক সঙ্গে নামাজ পড়ার উপায় ছিল না। সেইসঙ্গে অনেকের বাড়িতেই উপযুক্ত জায়গা নেই। স্থানীয় সূত্রে এসব জানার পরেই এগিয়ে আসে চট্টোপাধ্যায় পরিবার।
ওই চট্টোপাধ্যায় পরিবার তাদের বাড়ির তিনতলায় শেড দেওয়া ছাদে জনা দশেক নামাজ পড়তে পারবেন বলে প্রস্তাব দেন। প্রথমে ইতস্তত করলেও, পরে পরিবারটির আন্তরিকতায় মুগ্ধ হন জামাল শেখ, সাহিল শেখ, তামাল শেখ নামের সেখানকার মুসলিম বাসিন্দারা।
চট্টোপাধ্যায় বাড়ির বধূ চাঁপাদেবীর পেতে দেওয়া কার্পেট, ভেলভেটের চাদরেই প্রতিদিন নামাজ পড়তে শুরু করেন তারা।
চাঁপাদেবী বলেন, বরাবর যে কোনও সমস্যায় পরিবারের মতোই পাশে পেয়েছি মুসলিম দাদাদের। রোজ নামাজের আগে তিন তলার ছাদ পরিষ্কার করতাম, যাতে ওদের কোনও অসুবিধা না হয়। কোনও কোনও দিন ছাদে ওদের নামাজ চলার সময়ে আমিও নীচে ঠাকুরঘরে প্রার্থনা করেছি। মানুষের পাশে থাকা মানুষেরই ধর্ম।
‘কালনা আঞ্জুমান হেমায়েতউল মুসলিম মিন’ সংগঠনের সম্পাদক নাজির শেখ বলেন, এক দিকে, করোনার ভয়। অন্য দিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নামাজের জন্য একটা ঘেরা জায়গা দরকার ছিল আমাদের অনেকের। চট্টোপাধ্যায়েরা যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন, ভোলার নয়।
>আনন্দবাজার<
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷