Breaking News

[নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে জাল,দলিলে ১০ কোটি টাকার হিন্দু সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

 বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে জামতলায় একটি হিন্দু পরিবারের প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ২৭ শতাংশ জমি জাল দলিলের মাধ্যমে দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। 



জাহাঙ্গীর মোল্লা নামে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি একটি শিল্প গ্রুপের পরিচালক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ।
গত শনিবার এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার কার্যালয় এবং ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী উত্তম কুমার দাস।
উত্তম কুমার দাস জানান, শহরের জামতলা ধোপাপট্টি এলাকায় ১৯৬২ সালে তার বাবা মৃত লাল মোহন দাস হিন্দু জমিদারদের কাছ থেকে সাড়ে ২৭ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। ওই জমির সব কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে। ১২ শতাংশ জমির ওপরে তাদের ঘরবাড়ি ও পারিবারিক মন্দির রয়েছে। বাকি জমি খালি। ১৯৬৮ সালের ২৬ নভেম্বর একটি জাল দলিলের মাধ্যমে এ জমি জেসমিন চৌধুরী কিনেছেন বলে দাবি করে জাহাঙ্গীর মোল্লার কাছে বিক্রি করেন। জেসমিনের দাবি অনুযায়ী, ২৬ নভেম্বর তিনি উত্তমের ভাইদের কাছ থেকে জমি কিনেছেন, অথচ এর দুই দিন পর অর্থাৎ ১৯৬৮ সালের ২৮ নভেম্বর তার বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর আগে ছেলেরা তার জমি বিক্রি করেন কীভাবে। জাল দলিল তৈরি করে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে উত্তম ও তার ভাইয়েরা জেসমিনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই জমির ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন আদালত। অথচ জেসমিনের কাছ থেকে দলিল করে জাহাঙ্গীর মোল্লা তাদের জমি দখলের চেষ্টা করছেন। যে জমির মালিক জেসমিন চৌধুরী নিজে নন, সেই জমি তিনি কী করে জাহাঙ্গীর মোল্লার কাছে বিক্রি করেন?
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দেওয়া লিখিত অভিযোগে উত্তম দাস উল্লেখ করেছেন, কয়েক মাস ধরে লোকজন দিয়ে তাদের জমি দখলের চেষ্টা করছেন জাহাঙ্গীর মোল্লা। তাদের জমির পার্শ্ববর্তী জমি কিনে সেই জমি ভরাট করছেন জাহাঙ্গীর মোল্লা। একইসঙ্গে সীমানা খুঁটি ভেঙে তাদের জমিও ভরাটের চেষ্টা করছেন। গত ৩ জুন বিকেলে জমি ভরাটে বাধা দিতে গেলে ৩০-৩৫টি মোটরসাইকেলে আসা ৭০-৮০ জন অপরিচিত লোক এসে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। হুমকিদাতাদের একজন আব্দুর রহমান জমি ছেড়ে না দিলে দোকানপাট, মন্দির, মন্দিরের প্রতিমা ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হবে চিৎকার করে গেছে।
যোগাযোগ করা হলে জমি ভরাটের বিষয়টি স্বীকার করেন অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর মোল্লা। তার দাবি, ওই এলাকার ৮০ শতাংশ জমির মালিক তিনি। জমিগুলো ভরাট করছেন। একই সঙ্গে পাশের বিরোধপূর্ণ জমিও ভরাট করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বালু ফেলে রাখছি। এখনই দখল নিচ্ছি না। মামলা চলছে, মামলা নিষ্পত্তি হোক। আদালত পরে যার পক্ষে রায় দেবেন, জমি সেই পাবেন।’
তবে উত্তম দাস বলেন, আদালত ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কেউই ওই জমিতে কোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন না। সেখানে বালু ফেলে জমি ভরাট করতে আসা আদালত অবমাননা।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কার্যালয়ে দিয়ে থাকলেও আমার কাছে আসেনি। অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া গেলে তা এসপি অফিস থেকে সরাসরি সংশ্নিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। অভিযুক্ত একজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।


      সুত্রঃ- সমকাল..

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷