Breaking News

যশোরে দুটি হিন্দু পরিবারের উপর হামলা,ট্রাকটর দিয়ে গুড়িয়ে দিল বসতবাড়ি

সনাতন নিউজ২৪. 
যশোরের চৌগাছায় হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সকাল ৭ টায় লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালিয়ে এই উচ্ছেদ চালানো হয়। উচ্ছেদের পর তাদের জমিতে ট্রাকটর দিয়ে চষে সমান করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের লোকজন ভয়ে পালিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের মাঝের পাড়ায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় ধরে পৈত্রিক জমিতে কুমার পাটনি নামের এক ব্যক্তি তার পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের কিছুদিন পরেই তিনি মারা যান। ফলে ওই জমিতে ছেলে মিত্র পাটনি, মেয়ে ছায়া রাণী স্বামী, সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। দুটি পরিবারে মোট ৯ জন সদস্য রয়েছে। কিন্তু এই জমি গ্রামের মৃত করিম বক্সের ছেলে বুলবুল, লাভলু, মুকুল ও বাবলু মুন্সি নিজেদের দাবি করে কয়েকবার দখল করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে কয়েকবার শালিসও হয়েছে গ্রামে। বর্তমানে এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।

এদিকে আজ সকাল ৭ টায় প্রতিপক্ষ পারভেজ, লাভলু, বিপুল মল্লিকসহ গ্রামের ১০-১২ জন লাঠিসোটা নিয়ে ওই দুটি পরিবারে হামলা চালায়। টিনসেড দিয়ে ঘেরা দুটি ঘর উচ্ছেদ করে তারা। দুটি পরিবারের বসতি জিনিসপত্র সব ভাঙচুর চালিয়ে বসবাসের স্থান ফাঁকা করে। উচ্ছেদের সময় পরিবারের লোকজন উপস্থিত থাকলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ভয়ে তারা পালিয়ে যায়। উচ্ছেদের পরে ওই জায়গায় ট্রাকটর চালিয়ে চষে দিয়ে সমান করে দেয় প্রতিপক্ষরা।

ভূক্তভোগী মিত্র পাটনি (৫৭) জানান, আমরা দুই ভাইবোন। আমি আর বোন ছায়া রাণী। হিন্দু আইন অনুয়ায়ী পিতার সম্পত্তি আমরা পেয়েছি। অথচ প্রতিপক্ষরা দাবি করছে আমার মা মৃত দূর্গা রাণী জীবিত থাকার সময় ওই জমি তাদের রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার মা বেঁচে থাকা অবস্থায় মানসিক রোগী ছিলেন। তারপরও আমার মা হিন্দু আইন অনুসারে ওই জমি লিখে দিতে পারেন না। প্রতিপক্ষের ভয়ে আমরা এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি। কোথায় যাব কি করব ভেবে পাচ্ছি না।

গ্রামে বসবাসকারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম হুসাইন জানান, আজ সকাল ৭ টার দিকে তারা হামলা চালায়। ভিটায় যা ছিল সবই তারা উচ্ছেদ করে। পরে ট্রাটকর দিয়ে চষে দেওয়া হয়েছে। দুটি পরিবারের লোকজন ভয়ে পালিয়ে আছে। এভাবে উচ্ছেদ ঘটনা দুঃখজনক।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে জমিমজা নিয়ে দ্বন্দ। ওখানে কোন বসবাসের ভিটে নেই। কিছু লাকড়ি রাখা ছিল। সেগুলো সরিয়ে ট্রাকটর দিয়ে চষেছে বলে আমি জেনেছি। তবে ঘটনা তদন্ত চলছে। আইন অমান্য করে কোন কিছু করা হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মেরজ জেনারেল (অবঃ) ডাক্তার নাসির উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি। আইন হাতে তুলে নিয়ে উচ্ছেদ করা অন্যায়। বিষয়টি আইনের মাধ্যমে দেখা হবে। কোন রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড মেনে নেওয়া হবেনা।

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷