মহারাষ্ট্রে ৩ জন নির্দোষ হিন্দু সন্ন্যাসীকে হত্যা করলো ২০০ জন মুসলমান, এই ঘটনায় চুপ বুদ্ধিজীবি তথা দেশের সংবাদ মাধ্যম
সনাতন নিউজ২৪.
ভারতবর্ষ ও বিশ্বব্যাপী মা ভারতীর সেবক, সমগ্র সূধী মহাত্মা ও সাধু-সন্ত মন্ডলীর জ্ঞাতার্থে জানাই, গত ১৭ ই এপ্রিল ২০২০ আধ্যাত্মিক ভারতবর্ষের পরম ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী পঞ্চদশনামী জুনা আখাড়ার ১৩ মড়ির, মির্জাপুর পরিবারের সদস্য, মহন্ত রামগিরীজি মহারাজ, গুজরাট প্রদেশের সোমনাথ এর কাছে নিজ আশ্রমে ব্রহ্মলীন হয়ে যাবার পর, প্রথাগতভাবে পরিবারের কিছু সন্ত, মহাত্মাদের আহবান করা হয় সমাধিস্থ করার জন্য এবং মহারাষ্ট্রের নাসিক এ ৭০ বর্ষীয় মহন্ত কল্পবৃক্ষ্য গিরীজি মহারাজ ও ৩৫ বর্ষীয় মহন্ত সুশীল গিরীজি মহারাজ উক্ত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রওনা হন । লকডাউন চলার কারণে, মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার, ডহানু তহশীল এর অন্তর্গত, গড়চিঞ্চলে গ্রামের পাশে, পালঘর থানার কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা ওনাদের গাড়ি আটকান ও গাড়ি থেকে বের করে রাস্তায় বসিয়ে রাখেন । কিছুক্ষণের মধ্যে, পুলিশকর্মীদের সামনেই, উক্ত গ্রামের আশপাশ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ হাতে লাঠি, গাছের ডাল, লোহার রড, পাথর ইত্যাদি নিয়ে হঠাৎই ঝাঁপিয়ে পড়েন মহন্ত ও তাদের ড্রাইভার এর ওপরে এবং পুলিশের সামনেই নৃশংসভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে
এই ঘটনায় জুনা আখাড়ার প্রতিটি সাধু-সন্ত ভীষণভাবে মর্মাহত । ব্যক্তিগত ভাবে আমি জুনা আখাড়ার ১৩ মড়ির একজন মহন্ত ও নাগা সৈনিক হওয়ার সুবাদে মনে করি, এই হত্যা শুধু দুজন নিরীহ সন্ন্যাসী ও তাদের গাড়ির চালককেই করা হয়নি, একই সাথে সনাতন ভারতের সংস্কৃতি, সনাতন হিন্দু ধর্মকে, তথা সমগ্র হিন্দু সমাজ ও রাষ্ট্রকে করা হয়েছে ।
একই সাথে আমরা দেখেছি, বিগত কিছু বছরের মধ্যে সাধু-সন্ত ও মহাত্মাদের প্রতি লাঞ্ছনা, অত্যাচার ও অবমাননাকর ঘটনা লাগাতার হয়ে চলেছে ।
আজ শুধুমাত্র শ্রী শ্রী পঞ্চদশনামী জুনা আখাড়ার একজন মহন্ত হিসেবেই নয়, একইসাথে ভারতের সর্বপ্রথম হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল, 'অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা' এর পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের, প্রদেশ সভাপতি হিসেবে ও হিন্দু মহাসভার বিশ্বব্যাপী প্রতিটি সদস্য ও পদাধিকারীদের পক্ষ থেকে, এই ন্যাক্কারজনক বীভৎস হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাই । একইসাথে দশনামী সম্প্রদায়ের সমস্ত সাধু-সন্তদের আহ্বান জানাই, বিশ্বব্যাপী এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদের অনুরণণে যেন দুস্কৃতিদের হৃদকম্প উপস্থিত হয় ।
আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা, 'ধর্ম রক্ষতি রক্ষিতাঃ' এর মত শপথ
বাক্য পাঠ করে, সনাতন হিন্দুত্বের রক্ষার্থে আত্মবলিদান দেওয়ার অঙ্গীকার করার মুহূর্তকে । আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা, সুদূর অতীত ইতিহাসে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, সনাতন হিন্দুত্বকে রক্ষা করার জন্য, নশ্বর দেহ-প্রাণ-মন আহুতি দেওয়ার অমোঘ দায়বদ্ধতার কথা ।
তাই দশনামী সম্প্রদায়ের ৫২ টি মড়ির সকল সদস্য ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সমস্ত সাধু-সন্ত ও মহাত্মাদের কাছে, এই নৃশংস ঘটনার তীব্র প্রতিবাদের আহ্বান জানাচ্ছি ।
একই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী ও ভারতীয় আখাড়া পরিষদের সমস্ত পদাধিকারীদের কাছে নিবেদন রাখছি, এই প্রতিবাদের আওয়াজ যেন কোনোভাবেই স্তিমিত না হয় এবং প্রকৃত অপরাধীরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় । তার জন্য আমাদের যতদূর যাওয়া প্রয়োজন, আমরা যেন যেতে বিচলিত না হই, কারণ নৃশংস হত্যাকারীদের শাস্তি দানের মধ্যেই ধর্ম ও রাষ্ট্রের সর্ববিধ হিত ।
ইতিমধ্যেই অখিল ভারত আখাড়া পরিষদের অধ্যক্ষ মাননীয় মহন্ত নরেন্দ্র গিরীজি মহারাজ জানিয়েছেন, লকডাউন শেষ হবার পরেই, অখিল ভারত আখাড়া পরিষদের মাননীয় মন্ত্রী, মহন্ত হরি গিরীজি মহারাজের মধ্যস্থতায়, ভারতবর্ষে অবস্থিত সমস্ত মঠ-মন্দির ও আখাড়ার সাধু-সন্তরা মিলে একটি বৈঠকে বসবেন এবং সেখান থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে, বিশাল সংখ্যক সাধুসন্ত নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারকে ঘেরাও করবেন, যাতে এই নৃশংস ঘটনার পূর্ণ তদন্ত সুষ্ঠুভাবে হয় এবং ভবিষ্যতে এই ঘটনার আর কোনভাবেই যেন পুনরাবৃত্তি না হয় ও ভবিষ্যতে সাধুসন্তদের উপর অত্যাচার এর আগে, দুষ্কৃতীদের মনে যেন ত্রাস সৃষ্টি হয় ।
একই সাথে পূজনীয় জগৎগুরু শঙ্করাচার্যগন, সমস্ত পূজনীয় অখন্ডমন্ডলেশ্বর, মহামন্ডলেশ্বর ও মহন্তদের এবং আমার সমস্ত গুরু ভাই-বোনেদের জানাই, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা, এই সর্বব্যাপী প্রতিবাদে সব ক্ষেত্রে, প্রতিটি মুহূর্তে, সর্বতোভাবে আমাদের সাথে আছে এবং চিরকালই থাকবে ।
দুষ্কৃতীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত, আমরা থামবো না, এই অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে দশনামী সম্প্রদায়ের সকল ভক্ত-শিষ্য, শুভানুধ্যায়ীদের ও সনাতন হিন্দু ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল প্রতিটি পরমআত্মীয়কে জানাই, সমস্ত রকম গণমাধ্যমের মধ্যে দিয়ে, এই ঘটনা যেন বিশ্বব্যাপী প্রচার পায় । আপনারা তার জন্য এই ঘটনা যতটা সম্ভব শেয়ার করুন ।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷