রহিম মিয়া দুর্গাপূজা উৎসব কমিটির সভাপতি হিসাবে তিন বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন
সনাতন নিউজ২৪. <> ঢাকা - বাংলাদেশ, রহিম মিয়া দেবতা নাকি অসুর, মুসলিম নাকি মুশরিক এসব বিবেচনা করার অধিকার আমাদের কারো নেই, এই এখতিয়ার স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার। কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি যে মনুষ্যত্ববোধ লালন করছেন, ত্রিপুরা রাজ্যের অভয়নগরের এই সাধারণ মানুষেরা ধারণ করছে বংশপরম্পরায়, তা অতুলনীয়।
রহিম মিয়ার কাজের সমালোচনা করা যেতে পারে তবে তার আগে আপনার মাথায় রাখতে হবে এই মাঠে দুই ঈদে নামাজ পড়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা, নির্বিঘ্নে নামাজ অনুষ্ঠিত করতে প্রস্তুতি কমিটির দায়িত্বে থাকে হাবুল দত্ত, হরলাল দাশ, হিরালাল দাশ, স্বপন দাশ প্রমুখ ব্যক্তিরা। হিন্দু মরলে এরা দলবেঁধে শ্মশানে যায় দাহ করতে, মুসলমান মরলে যায় কবরস্থানে দাফনের জন্য। এদের কাজকে আপনি ধর্মের কঠিন বাক্য দিয়ে জাজ করতে পারবেন না। নিম্ন-মধ্যবিত্ত এই মানুষেরা দ্বিজাতি তত্ত্ব বুঝে না, এরা বুঝে মানুষ। যে মানুষকে শর্তহীন ভালবাসা যায়, সম্মান করা যায়, ধর্ম-বর্ণের চক্রব্যূহ ভেদ করে একে অন্যের প্রয়োজনে পাশে থাকা যায়।
এদিকে উত্তরা সেক্টর-৩ এর মাঠে যখন দুর্গাপূজা করতে বাধা দেয়া হয় তখন ত্রিপুরার তোলার মাঠে একজন রহিজ মিয়া দায়িত্ব নিয়ে দুর্গাপূজার আয়োজন করে। দিল্লির মসজিদে যখন আগুন লাগানো হয় তখন অখ্যাত তোলার মাঠে হাবুল দত্ত- হিরালাল দাশেরা ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত করার দায়িত্বে নিযুক্ত থাকে, রোজা নির্বিঘ্নে পালন করতে সহায়তা করেন। আজ পর্যন্ত সেখানে কোনো সংঘাত সেখানে হয়নি। এই মানুষগুলো তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শুভবুদ্ধির স্বীকৃতি পাবে কখনো?
মন থেকে যারা কাজ করে হয়তো তারা স্বীকৃতির আশা করে না, তাই এসব ঘটনা আজকের যুগে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার, অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। এই ভিডিও দশজন মানুষের চোখের সামনে এলে পাঁচজন অন্তত নিজের মন থেকে ধর্মান্ধতাকে সরিয়ে খানিকটা মানবতার কথা ভাববে, ভাববে মানুষের কথা। রহিম মিয়া যেভাবে কথাগুলো বলে গেলেন, আমি আজো পূজা নিয়ে এত আবেগঘন বক্তব্য শুনিনি। রহিম মিয়াকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও জানাই।
শেরার করুণ......
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷