রাজাকারপুত্রের দখলে শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. জি সি দেবের পৈতৃক ভিটা।
সনাতন নিউজ২৪. <> ঢাকা বাংলাদেশঃ-
স্বাধীনতার পরও দখলমুক্ত হয়নি আধুনিক মানবতাবাদী দর্শনের পথিকৃৎ শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেবের (ড. জি সি দেব) পৈতৃক ভিটা। ২০০৮ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর) ভূষিত করে জাতি আংশিক দায়মুক্ত হলেও বাড়িটি দখলমুক্ত করতে না পারায় হতাশ সিলেটের বিয়ানীবাজারবাসী। তাঁর বাড়ির কিছু অংশ দখল করে আছে এক রাজাকারপুত্র। স্থানীয় সুধীসমাজের দাবি, অনতিবিলম্বে পুরো বাড়ি দখলমুক্ত করে ড. জি সি দেব জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হোক। প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস এলে নানা আলোচনায় বাড়িটি উদ্ধারের কথা উঠলেও পরবর্তী সময়ে সব কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের লাউতা গ্রামে ড. জি সি দেবের পৈতৃক বাড়ির বেশির ভাগ দখলদারদের দখলে। দখলদাররা সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। জানা যায়, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে স্থানীয় বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা রইজ্জুদ আলী ওরফে রইয়া রাজাকার প্রথমে বাড়ির কিছু অংশ দখল করেন। পরবর্তী সময়ে বাড়ির অন্যান্য অংশও বেদখল হয়ে যায়। বর্তমানে রইয়া রাজাকারের ছেলে ছমিক উদ্দিন দখল করা অংশে পাকাঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। অন্য অংশে পরেশ চন্দ্র মালাকার, নরেশ চন্দ্র মালাকার ও হরিপদ মালাকার ঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন।
আধুনিক মানবতাবাদী দর্শনের পথিকৃৎ ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ১৯০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিয়ানীবাজারের লাউতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে প্রথম স্থান অর্জন করে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর কলকাতা রিপন কলেজে (বর্তমানে স্যার সুরেন্দনাথ কলেজ) দর্শন ও ন্যায়শাস্ত্রের শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিববাড়ির নিজ বাসভবনে নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করে।
ড. জি সি দেব স্মৃতি সংসদের সভাপতি লাউতা ইউপি চেয়ারম্যান এম এ জলিল বলেন, ‘ড. দেব আমাদের অহংকার। আমরা আশা করি, অবিলম্বে তাঁর বাড়িটি দখলমুক্ত করতে যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণ করবে কর্তৃপক্ষ।’ এ বিষয়ে জানতে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মাহবুবের মোবাইল ফোনে কল করা হলে ধরেননি তিনি।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷