Breaking News

ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজবাড়ীর নাটমন্দিরে গাজীপুর মহানগর বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সম্মেলন ২৮/২/২০২০ইং.

 প্রতিনিধি..
 বাংলাদেশ জাতীয়  হিন্দু মহাজোট,গাজীপুর জেলা মহানগর শাখার উদ্যোগে ২৮ফেব্রুয়ারি শুক্রবার একটি প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত সম্মেলন চমকপ্রদ সঞ্চালনায় ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়   হিন্দু মহাজোটের গাজীপুর মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার অঞ্জন ও মহিলা জোট নেত্রী মনিশা শ্রাবনী। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয়   হিন্দু মহাজোটের গাজীপুর জেলা মহানগর শাখার সভাপতি বাবু মানিক চন্দ্র দে এবং উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস.এম তরিকুল ইসলাম। সম্মেলনে প্রধান আলোচক বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড:গোবিন্দ প্রামাণিক তার বক্তব্যে, প্রথমেই বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, গাজীপুর জেলা মহানগর কমিটিকে ধন্যবাদ প্রদান করেন।পরে তিনি বলেন আজ আমরা হিন্দুরা দুর্গতিনাশিনীর পূজো করি, শনি দেবের পূজো করি তবুও আমাদের বিপদ দূর হয়না।এর কারণ হলো-যে নিয়ম মেনে আমাদের পূজো করা দরকার সেই নিয়মে আমরা পূজা করিনা। তাই পুরহিত দের মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করে ভক্তি পূর্ণ মনোভাব নিয়ে পূজা করতে হবে।হিন্দু ইতিহাস টেনে তিনি বলেন আগে ইরাক, ইরান,সৌদি, মিশর, গ্রিক, তুরস্ক, কুয়েত, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ আরও বিভিন্ন দেশে এক সময় ১০০% হিন্দুদের বসবাস ছিলো। কিন্তু আজ তা হিন্দু শূন্যতে পরিণত হয়েছে!এর কারণ যুগে যুগে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছে, অত্যাচার নির্যাতন সয্য করেছে এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে হিন্দু কমতে কমতে আজ ১০% নেমে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারাকাতের গবেষণা উল্লেখ করে তিনি বলেন এই ভাবে হিন্দু কমতে থাকলে আগামী ৩০বছর পর বাংলাদেশ হিন্দু শূণ্য হয়ে যাবে।কিন্তু তিনি বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট গাজীপুর জেলা মহানগর কমিটির,প্রতিনিধি সম্মেলনের আয়োজন দেখে বলেন,এ ভাবে সারা বাংলাদেশের হিন্দুরা দলে দলে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটে যোগদান করে হিন্দুদের রক্ষায় ও শক্তিশালী করে তুলতে এগিয়ে আসলে অধ্যাপক আবুল বারাকাতের ভবিষ্যত বাণীও মিথ্যেতে পরিণত হবে। আর বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট গাজীপুর মহানগরের,মানিক চন্দ্র দে,আশিষ কুমার অঞ্জন ও রঘুনাথ বর্মন তাদের মত করে সকল হিন্দুরা জেগে উঠলে আর কেউ আমাদের এগিয়ে যাওয়াকে রুখতে পরবেনা।আগে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে হিন্দুরা ভারতে চলে যেতো আর এখন ভারতের হিন্দুরা বিভিন্ন দেশে পালাচ্ছে। হিন্দুরা এখন ভারতেও নিরাপদ নেই। আমাদের দেশের হিন্দুরাও বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে আর এই নির্যাতন রুখে দিতেই আমরা গড়ে তুলেছি বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।আগে স্বাধীন ভাবে জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিতে পারতাম না আর এখন সাহসের সাথে তা বলতে পারি।হিন্দু স্বার্থে আমাদের দাবী যে আমদের পূর্ব পুরুষের বিভিন্ন রাজবাড়ী,জমি-ভিটে এবং মন্দির যেগুলো (বেদখল) সরকারি দখলে রয়েছে সেগুলো হিন্দুদের কাছে হস্থান্তর করতে হবে।হিন্দুদের অসুবিধা, চাওয়া-পাওয়া জাতীয় সংসদে তুলে ধরতে মহিলা সংরক্ষিত আসনে ৭ জনসহ ৬৪ জেলা থেকে সর্বমোট ৫০জন এমপি আমরা চাই যা শুধু মাত্র হিন্দু ভোটের মাধ্যমেই নির্বাচিত করা হবে। গোবিন্দ প্রামাণিক হিন্দু বাবা-মা দের বলেন আপনাদের সন্তানদের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন,যেন কোন জঙ্গী আপনাদের সন্তানদেরকে ফুসলিয়ে ধর্ম ত্যাগ না করায় এবং পরে কাফের বলে হত্যার দিকে ঠেলে না দেয়।বিগত সময়ে কয়েকজন লোভে পড়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করে কাফের খেতাব নিয়ে হত্যার স্বীকার হয়েছে।সবশেষে আগামী ৬ই মার্চ ঢাকাতে  বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহা সম্মেলনে দলে দলে সকল হিন্দুদের যোগদান করে সম্মেলনেকে স্বার্থক করে তুলতে আহ্বান জানিয়েছেন এবং উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ প্রদান করেন এ্যাড: গোবিন্দ প্রামাণিক।নেপাল থেকে আগত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ওর্য়াল্ড হিন্দু ফেডারেশনের শ্রীমতি মীনা দেবী রাজ শর্মা তার বক্তব্যে বলেন,যারা ঠিক মত ধর্ম পালন করেনা তার সঠিক মানুষ হয়ে উঠতে পারেন।তাই সকল হিন্দুদের নিয়মিত ভগবানের পূজো করতে হবে।তিনি বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙ্গালী জাতির জন্য নয় বঙ্গবন্ধু এখন বিশ্ব বন্ধু।একই সাথে ভাষা শহীদ সালাম, রফিক,বরকত এবং ১৯৭১ এ যুদ্ধ করে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কথা স্মরণ করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,বঙ্গবন্ধুর স্বপনের বাংলাদেশে গড়ে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং দাবী জানান হিন্দুরা যেন বাংলাদেশ শান্তিতে, নিরাপদে থাকতে পারে। পরে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ও জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিয়ে তার বক্তব্য সমাপ্তি করেন।সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র এ্যাড: জাহাঙ্গীর আলম,সম্মানিত অতিথি গাজীপুর মেট্র:পুলিশ কমিশনার শরিফুর রহমান, মান্যবর অতিথি বিগ্রেডিয়ার জেনারেল বিনোদ খারেল, বিশেষ আলোচক অতিথি অধ্যাপক মুকুল কুমার মল্লিক ও অধ্যাপক সুব্রত কুমার দাস, প্রদীপ প্রজ্জলন অতিথি প্রদীপ কুমার পাল,বিশেষ আমন্ত্রিতি অতিথি এ্যাড: প্রতিভা বাকচী, এ্যাড: মিলন ভট্টাচার্য এবং বাংলাদেশ জাতীয়   হিন্দু মহাজোটের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।


কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷