Breaking News

হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি দখল

উজ্জ্বল রায় নিজস্ব প্রতিনিধিঃ চলচ্চিত্রের নায়ক জায়েদ খান ও তার ভাই পুলিশের ওসি শহিদ এবং ঠিকাদার পিন্টু হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি দখল করায় ওই পরিবারের মেয়ে অনন্যার আবেদন। মেয়েটি জানায় তার বাবা তার সারাজীবনের কষ্টের উপার্জন থেকে পিরোজপুর সার্জিকেয়ার ক্লিনিক এর মূলভবনসহ সবকিছু নির্মাণ করেও এখন ভাড়াটিয়ার মত বসবাস করে চলেছে।
মেয়েটি বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হল।
একজন উচ্চ মধ্যবিত্ত সমাজের একজন পরিচিত মানুষ ডাঃ বিজয় কৃষ্ণ হাওলাদার..সকলেই কম বেশী তাকে চেনেন,জানেন। আমার বাবা এলজন সৎ এবং ন্যায়নিষ্ঠ ডাক্তার। আমার মা পিরোজপুর সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল।
তার মত শান্ত এবং নরম স্বভাবের মানুষ খুব কম ই আছে পৃথিবীতে। মা এবং বাবা তাদের সারাজীবনের কষ্ট এবং উপার্জন থেকে পিরোজপুর সার্জিকেয়ার ক্লিনিক এর মূলভবনসহ সবকিছু নির্মাণ এবং প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা এই ভবনের পঞ্চম তলায় বসবাস করে আসছি প্রায় ১১ বছর ধরে। কিন্তু আচমকা আমাদের সুখী পরিবারে যমদুতের মত নেমে আসে এক রাক্ষস,তার নাম পিন্টু,ওরফে নায়ক জায়েদ খান মনুর ভাই ওবাইদুল হক পিন্টু।সম্প্রতি আমার বাবা রোড এক্সিডেন্টে প্রচন্ডরকম আহত হয়ে শয্যাশায়ী হন। এ সময় ক্লিনিকের তত্ত্বাবধায়নের দায়ীত্ব নেন বাবার বন্ধু এবং তথাকথিত ব্যাবসায়িক অংশীদার পিন্টু। যে আদৌ অংশীদার কি না তাতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে.! এরপর সে আস্তে আস্তে তার দুরভিসন্ধি চরিতার্থ করার জন্য প্লান শুরু করে। ক্লিনিকের বেশীরভাগ পুরাতন কর্মচারীদের উঠিয়ে দিয়ে,সে সব জায়গায় নিজের পোষা কিছু ডাকাত এবং গুণ্ডাদের বহাল করে।
এরপর আমার বাবার অসুস্থতার এবং আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে গত ২৩ মার্চ ২০১৬ তারিখ রাত ২ টায় আমাদের উপরে হামলা চালায়।তখন বাসায় ছিলাম আমি,মা এবং আমার ঠাকুমা। বাবা বিছানা থেকে উঠতে পারে না এমন অবস্থায় তারা ক্লিনিকের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে জোর করে আমাদের বাসার মধ্যে চাপাতি,রামদা,পিস্তল ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে ঢুকেই প্রথমে আমার মা কে পিস্তল দিয়ে আঘাত করে। আমি ছুটে আসলে আমাকে চড় দিয়ে বিছানার উপর ফেলে দেয় এবং ঠাকুমাকে দড়ি দিয়ে বেধে ফেলে।
আমি চিৎকার করতে চাইলে,আমার মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে হাত-পা বেধে ফেলে আমাদের সবাইকে প্রচন্ড মারধর করে…বাসা থেকে আমাদের যাবতীয় মালামাল এবং টাকা-পয়সা,প্রয়জনীয় কাগজপত্র সহ প্রায় আনুমানিক ১ কোটি টাকার মালামাল লুট করে। এরপর আমাদেরকে জোর করে,আমাদের ই এম্বুলেন্সে তুলে ঝাটকাঠীর একটি বাসায় তুলে দিয়ে আসে,সাথে দিয়ে আসে হাড়ি-পাতিল সহ কিছু জিনিস। পিরোজপুরে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়,ভয় দেখানো হয় যেন আমরা এই ঘটনা প্রকাশ না করি।
এমন অবস্থায় আমি এবং আমার মা..পিরোজপুরের এমপি এবং মেয়র সাহেবের শরনাপন্ন হলে,তাদের সহযোগীতা এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত ২৭ শে মার্চ ২০১৬ তারিখ থেকে আমরা আমাদের বাসায় আবার থাকা শুরু করি। প্রশাসন,এবং মিডিয়া উপস্থিত থেকে আমাদের বাসায় তুলে দেয়। কিন্তু প্রতিটা দিন,প্রতিটা রাত আমরা আতঙ্কে কাটাচ্ছি, পিন্টু ক্রমাগত হুমকি দিয়ে ই চলেছে। ক্লিনিক এ তার কিছু পোষা গুন্ডা সবসময় আমাদের অকারনে হয়রানি করে। আমরা না পারছি শান্তিতে বসবাস করতে,না পারছি সুস্থভাবে বাঁচতে।
প্রতিদিন বিভিন্ন ভাবে আমাদের হয়রানি করা হয়। কখোনো গেট দিয়ে ঢুকতে দেয় না। আমাদের বাসায় অন্য কেউ আসলে বাধা দেয়,অপমান করে। গেটে দাড় করিয়ে রাখে। এমন অবস্থা হয়েছে,..জীবনের নিরাপত্তা পাচ্ছি না, নিজেদের বাসায়। নিজেদের বাসায়,নিজেরা ই বন্দি জীবন কাটাচ্ছি। এমতাবস্থায় আমার, সকল বন্ধু,শুভানুধ্যায়ী দের কাছে আমার একটা কথাই বলার আছে,কেউ যদি কোনভাবে আমাদের সহায়তা করতে পারেন..চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
আমি এই অত্যাচার এর সুষ্ঠু এবং দ্রুত বিচার এর দাবী করছি। এবং প্রসাসন ও মিডিয়ার দৃস্টি আকর্ষন করছি। আমাদেরকে এই অনিশ্চিত জীবন থেকে সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করুন। আমরা সসম্মানে,ভালভাবে বেচে থাকতে চাই।

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷